রাতে কাঁথির রাস্তায় জমায়েত। নিজস্ব চিত্র।
কোভিড বিধি ভঙ্গের একাধিক অভিযোগ ওঠার পর রাত ৯ টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বিধি নিষেধ আরও কঠোরভাবে বলবৎ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। পরিস্থিতি বুঝে রাতের কাঁথিতে টহলদারি বাড়িয়েছে পুলিশ। চলে অনবরত পেট্রোলিং। কিন্তু শহরের বিধিভঙ্গে ছবিটা আদৌ কি পাল্টেছে!
শুক্রবার রাতের কাঁথি শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বিধি ভঙ্গের ছবি ধরা পড়েছে একাধিক জায়গায়। শহরের রাজাবাজার মোড়ে রাত ১১টার সময়েও যেন মেলা বসেছে। শহরে মূল রাস্তার ধারে নতুন দোকান তৈরির কাজ চলছে। রাত জেগে নির্মাণকর্মীরা যেমন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, তেমনই এলাকায় মদ্যপদেরও দাপাদাপি রয়েছে। কিছুটা এগিয়ে বড় ডাকঘর। সেখানে খোলা চায়ের দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন বেশ কয়েকজন। তাদের অনেকেরই মুখে মাস্ক নেই।
কাঁথি থানার একেবারে গা ঘেঁষে রয়েছে চৌরঙ্গী মোড়। রাস্তার দু’দিকে রাখা বেশ কয়েকটি মোটরবাইক আর ব্যক্তিগত গাড়ি। রাস্তার একপাশে চেয়ার পেতে বসে আড্ডা দিচ্ছে গাড়ি আর বাইকের মালিকেরা। এখানেও খোলা দোকানপাট। অর্ডার অনুযায়ী চা, সিগারেট, পান আর গুটখা পৌঁছে দিচ্ছেন দোকানের কর্মীরাই।
আড্ডা মারতে আসা এক যুবক বলে উঠলেন, ‘‘রাতে কোনও ভয় নেই। দিনভর সকলেই আমরা কর্মব্যস্ত। তাই রাতেই বন্ধুরা মিলে গল্প করি।’’ কিন্তু নাইট কার্ফু চলছে যে? তা শুনে আরেক যুবকের জবাব, ‘‘সরকার নিয়ম করেছে ঠিক। তবে আমাদের শরীরে করোনা নেই। আর হবেও না আমাদের।’’
কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের সামনে থেকে জুনপুট মোড় পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার একাধিক ধাবা, রেস্তোরাঁ আর হোটেলগুলিতে রাত এগারোটার পরেও ভিড়। কোথাও কোথাও বাইক রেখে মোবাইলে লুডো খেলা চলছে। সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ডে আবার একটি সমবায় সমিতির অনুষ্ঠান ঘরে বিয়ে বাড়ির রিসেপশন চলছে। ক্যামেরায় তুলতে দেখেই কেউ মুখ লুকিয়ে ফেললেন। আবার কেউ বললেন, ‘‘দাদা ছবি তুলবেন না প্লিজ।’’
ঘণ্টাখানেকের সফরে শহরের কোথাও দেখা মিলল না পুলিশের। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) বিদিত রাজ ভুন্দেশ বলছেন, ‘‘নাইট কার্ফু কার্যকর করার জন্য শহরজুড়ে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। যেসব জায়গায় ফাঁকফোকর রয়েছে, সেখানে আমরা দ্রুত অভিযান চালাব।’’