তমলুকে রূপনারায়ণের তীরে বারুণী মেলায় ভিড়। নিজস্ব চিত্র।
মকর স্নানে আসা পুণ্যার্থীদের জন্য মাস্ক, স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংক্রমণ আটকাতে বন্ধ রাখা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী মেলা। কিন্তু ভিড় ঠেকানো যায়নি মকর সংক্রান্তিতে। আর সেই ভিড়ে করোনা-বিধি না মেনে চলার প্রবণতাই বেশি। পূর্ব মেদিনীপুরে মকর স্নান ও মেলার জন্য বিখ্যাত জায়গাগুলোয় একই ছবি।
তমলুকে রূপনারায়ণ নদ ও শঙ্করআড়ায় কপালমোচন ঘাটে পৌষ সংক্রান্তিতে মকর স্নানের ভিড় এবার যথেষ্টই ছিল। কপালমোচন ঘাটের কাছে বারুণী মেলায়ও এবার প্রচুর দর্শনার্থী। করোনা আবহে ভিড় সামলাতে রূপনারায়ণের স্টিমারঘাট ও কপালমোচন ঘাটে এলাকায় তমলুক পুরসভা, পুলিশ ও বারুণী মেলা কমিটি সতর্কতামূলক নানা ব্যবস্থা নিয়েছিল। ওই এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোর থেকে লোক সমাগম শুরু হয় প্রাচীন বারুণী মেলায়। মেলা কমিটির সম্পাদক সৌমেন গজেন্দ্র মহাপাত্র বলেন, ‘‘করোনা আবহের মধ্যেও মকরস্নান ও মেলায় বেশ ভিড় হয়েছে। আমরা দর্শনার্থীদের মাস্ক, স্যানিটাইজার বিলি করেছি।’’ তমলুক পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় একই কথা বলেছেন।
পটাশপুরে গোকুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন গোকুলানন্দ জীউ মন্দির ঘিরে আটদিনের তুলসীচারা মেলা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের সবচেয়ে বড় এই মেলা বন্ধ রেখেছেন উদ্যোক্তারা। মেলা না বসলেও মকর স্নানে এদিন ভোর থেকে গোকুলানন্দ জীউ মন্দির সংলগ্ন কেলেঘাই নদীতে ভিড় জমে। তবে মাস্কের বালাই ছিল না কারও। মন্দিরে ছিল নিজস্বী তোলার হিড়িক।
নন্দীগ্রামের-১ নম্বর ভেকুটিয়া পঞ্চায়েতের দীনবন্ধুপুরে অবস্থিত বাশুলি মন্দিরে প্রতি বছর মেলা বসে। এ বছর মেলার প্রচার ছিল না। তবু উপচে পড়েছে ভিড়। একদিনের এই মেলায় দোকান বসেছে ২৩৭টি। এদিন হলদিয়ার বিভিন্ন খেয়া ঘাট থেকে কয়েক হাজার মানুষ জলপথে মেলায় আসেন। অনেকে মেলার কাছে হলদি নদীতে পুণ্যস্নান করেছেন। তবে মেলায় আগতদের বেশিরভাগই মাস্ক পরেননি। এদিন রাত ৭টা পর্যন্ত বিশেষ ফেরি সার্ভিস চালু ছিল।
এদিন ওল্ড এবং নিউ দিঘার বিভিন্ন ঘাটেও মকর স্নানের ভিড় ছিল। এদিন তাজপুর এবং মন্দারমণিতেও প্রচুর পর্যটক এসেছিলেন। মকর উপলক্ষে দিঘা, শঙ্করপুরে মৎস্যজীবী সংগঠনের উদ্যোগে বুধবার রাতে গঙ্গোৎসব শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে দিঘা মোহনা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে দশদিনের গঙ্গোৎসবও শুরু হয়েছে। ব্যবসায় ঘাটতি থাকায় অনুষ্ঠানে কাটছাঁট করা হয়েছে এ বছর। তবে দশদিন ধরে জলসা হবে। সংগঠনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমনের কথা মাথায় রেখে গোটা মোহনা এলাকা নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। দর্শকদের মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। তবে অতিরিক্ত জমায়েতের সম্ভাবনার কথা ভেবে এ বছর সি ফুড ফেস্টিভ্যাল বন্ধ রাখা হল।’’