আলো-আঁধারিতে বিপদ পুরীগেট উড়ালপুলে

খড়্গপুরের পুরীগেট উড়ালপুলের একাংশে বাতি নিভে গিয়েছে। এর ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ার পাশাপাশি নিরাপত্তার অভাবও বোধ করছেন শহরবাসী। শহরের ঝাপেটাপুরের দিক থেকে আইআইটির দিকে যেতে গেলে ভরসা এই উড়ালপুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৭ ০২:৩৮
Share:

অন্ধকার: বেশিরভাগ আলো জ্বলে না পুরীগেট উড়ালপুলে। —নিজস্ব চিত্র।

একে একে নিভিছে দেউটি। খড়্গপুরের পুরীগেট উড়ালপুলে।

Advertisement

এমনিতেই দুর্ঘটনাপ্রবণ এই উড়ালপুল। মৃত্যু হয়েছে অনেকের। পুলিশ জানিয়েছিল, নকশাটি ত্রুটিপূর্ণ। এ বার সেখানে নিভে যাচ্ছে একের পর এক আলো। ফলে প্রাণ হাতে করে যাতায়াতের পথটিতে ঝুঁকি আরও বাড়ল।

খড়্গপুরের পুরীগেট উড়ালপুলের একাংশে বাতি নিভে গিয়েছে। এর ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ার পাশাপাশি নিরাপত্তার অভাবও বোধ করছেন শহরবাসী। শহরের ঝাপেটাপুরের দিক থেকে আইআইটির দিকে যেতে গেলে ভরসা এই উড়ালপুল। কিন্তু দিন দিন বিপজ্জনক হয়ে উঠছে উড়ালপুলের দু’দিকে নামার পথের বাঁক। এ ছাড়াও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে উড়ালপুলের উপরে আয়মার দিক থেকে উঠে আসার রাস্তার সংযোগস্থল। পুলিশ নকশার ত্রুটির কথা জানালেও সেই ত্রুটিপূরণে তাদের পক্ষ থেকে কোনও উন্নত ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি এখনও পর্যন্ত। তার উপর মাসখানেক হল উড়ালপুলের বাতিগুলি নিভে যেতে শুরু করেছে। ফলে সমস্যা বাড়ছে উড়ালপুল ব্যবহারকারীদের। তবে তা নিয়ে পুরসভার হেলদোল নেই বলেই অভিযোগ শহরবাসীর।

Advertisement

রেল শহরে দীর্ঘ চাহিদার পরে ২০১৩ সালের ১০ মে উড়ালপুল চালু হয় পুরীগেটে। রেল, আইআইটি ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয় এই উড়ালপুল। এর পরে বহু দিন সেখানে কোনও বাতিস্তম্ভ ছিল না। পরে পূর্ত দফতরের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের অধীনে ৭৬টি ‘ভেপার ল্যাম্প’ লাগানো হয়। তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পায় পুরসভা। গত বছর সেই ভেপার ল্যাম্প খুলে এলইডি পথবাতি লাগায় পুরসভা। সেই সঙ্গে উড়ালপুলের সৌন্দর্যায়নে গার্ডওয়াল ও পথবাতির খুঁটিয়ে জড়িয়ে দেওয়া হয় এলইডি রিং-লাইট। গত কয়েক মাস ধরেই সেই আলো নিভতে শুরু করে। এখন তার অধিকাংশই নিভে গিয়েছে। এখন দিন পনেরো ধরেই উড়ালপুলের প্রায় ৩০টি পথবাতি জ্বলছে না।

উড়ালপুল সংলগ্ন ছোট ট্যাংরা এলাকার বাসিন্দা অনিতা রায়ের কথায়, “নির্জন এলাকার উড়ালপুলটিতে আলো থাকায় ভয় লাগত না। কিন্তু এখন অন্ধকার হয়ে থাকায় নিরাপত্তার অভাব বোধ হচ্ছে। যে ভাবে একের পর এক আলো নিভে যাচ্ছে তাতে এক দিন তো উড়ালপুলটা পুরো অন্ধকার হয়ে যাবে!” ওই পথে নিয়মিত যাতায়াত করেন তালবাগিচার বাসিন্দা সঞ্জীব ঘোষদস্তিদার। তিনি বলেন, “প্রায় ৩০টিরও বেশি পথবাতি নানা জায়গায় জ্বলছে না। কী ভাবে একের পর এক আলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সেটা যাঁরা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রয়েছে তাঁদের দেখা উচিত। এর ফলে দুর্ঘটনা বেড়ে যেতে পারে।” যদিও বিষয়টি নিয়ে পূর্ত দফতরের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মুজিবুর রহমানের কথায়, “আমরা ওই উড়ালপুলে আলো লাগিয়েছিলাম ঠিকই। তবে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পুরসভার।” এ বিষয়ে পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের বক্তব্য, “রোদে-জ্বলে কিছু নীল-সাদা এলইডি রিং-লাইট খারাপ হয়েছে। আর কিছু চুরি হয়ে গিয়েছে। আমরা বর্ষা চলে গেলে সেগুলি আবার লাগিয়ে দেব। তবে পথবাতি জ্বলছে না বলে খবর পাইনি। হয়তো বৃষ্টিতে বিকল হয়ে থাকতে পারে।” এ নিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement