প্রতীকী চিত্র।
শ্বাসকষ্ট নিয়ে সোমবার হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর জন্য আনা হয়েছিল উত্তম দলুইকে। দুপুর ৩টে নাগাদ সেখানে পৌঁছে উত্তমকে শুনতে হয়, চিকিৎসক নেই। তাঁকে যেতে হবে তমলুকে জেলা সদর হাসপাতালে।
হলদিয়া শিল্প শহরের তকমা পেলেও এখানের মহকুমা হাসপাতালের অবস্থা বেহাল বলে অভিযোগ। বর্তমানে মেডিসিন বিভাগের কোনও চিকিৎসকই উপস্থিত নেই হাসপাতালে। ফলে শুধু উত্তম দলুই নয়, বেশির ভাগ রোগীকেই রেফার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ওই বিভাগের তিনজন চিকিৎসকের মধ্যে একজন ইস্তফা দিয়েছেন। অন্যজন গুরুতর অসুস্থ। আর একজন চিকিৎসক কে সি জানা বুধ এবং বৃহস্পতিবার হাসপাতালে চিকিৎসা করেন। ওই কে সি জানাও গত ৩ ফেব্রুয়ারি চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন যে, ২৯ ফেব্রুয়ারির পরে তিনি আর হাসপাতলে আসবেন না।
সপ্তাহের বাকি পাঁচদিন হাসপাতালে মেডিসিনের চিকিৎসক থাকেন না। সেই কারণেই পরিষেবা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রেফারের সংখ্যা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ৩ ফেব্রুয়ারি ৯ জন রোগীকে তমলুক জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত রেফার হয়ে যাওয়া রোগীর সংখ্যা ৩।
এদিকে হলদিয়া ক্রমবর্ধমান দূষণ এবং হঠাৎ ঠাণ্ডা বাড়ার ফলে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও বাড়ছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অনেকেই গুরুতর শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসছেন। কিন্তু কোনও পরিষেবা ছাড়াই সবাইকেই ফিরে যেতে হচ্ছে। শ্বাসকষ্টের রোগী উত্তম দলুইয়ের ছেলে সুভাষ দোলুই বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম এখানে চিকিৎসার পর বাবা একটু ভাল হবেন। কিন্তু তা হল না। উল্টে আমাদের আবার কষ্ট করে তমলুকে যেত হল। আগে কিন্তু এই জাতীয় সমস্যার সমাধান এখানেই হয়ে যেত।’’ রোগীদের একাংশের আবার অভিযোগ, হাসপাতালেই রোগীকে ভর্তি করতে হলে, ‘মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক নেই জানা সত্ত্বেও ভর্তি করা হয়েছে’— এই মর্মে বন্ড দিতে হচ্ছে।
হাসপাতালের পুরুষ বিভাগের ২১টির শয্যার মধ্যে ১৬টিই এখন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। যে হাসপাতালে সহজে শয্যা পাওয়া যায় না, সে হাসপাতাল প্রায় রোগীশূন্য। হাসপাতালের সিংহ ভাগ রোগী মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ভর্তি থাকেন। সে ক্ষেত্রে জরুরি বিভাগে যে সমস্ত চিকিৎসক নিযুক্ত রয়েছেন, তাঁরা সহজে রোগীকে ভর্তি করছেন না। তাঁদের বক্তব্য, ভর্তি করে নেওয়ার পরে রোগীদের দেখভাল করবে কে?