ঘাটালের রানিচকে গ্রামীণ সড়কে ভারী গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
জেলায় এসে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পরিবহণ দফতরও। কিন্তু গ্রামের রাস্তা দিয়ে এখনও অবাধেই ছুটছে ভারী গাড়ি। বাদ নেই শহরের ঢালাই রাস্তাও।
পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়েই দেখা যাচ্ছে এই ছবি। যদিও জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলছেন, “গ্রামীণ সড়কে এ বার থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য নিয়ে ছ’চাকা এবং চার চাকার গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে। অন্য গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নিয়ম ভাঙলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আর জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই তল্লাশি শুরু হয়েছে। প্রতিটি গ্রামীণ রাস্তায় সরকারি নির্দেশিকার বোর্ড টাঙানো হচ্ছে।”
গ্রামীণ সড়কগুলিতে ভারী যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডাম্পার, দশ চাকার লরি ও অতিরিক্ত পণ্যবাহী গাড়ি যাতে পুর-শহরের রাস্তাতেও চলাচল না করে, সে জন্য পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো পরিবহণ দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
গাড়ি চলাচল বন্ধ হলে গ্রামের মানুষের যাতে অসুবিধা না হয় সেই দিকে খেয়াল রেখেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। গত সপ্তাহে সেই নির্দেশ জেলাশাসকের কাছে পৌঁছেছে। ইতিমধ্যে জেলাশাসকের দফতর থেকে প্রতিটি ব্লক ও থানায় লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে গ্রামীণ সড়কে ভারী গাড়ি চলাচলে দাঁড়ি পড়েনি বলেই অভিযোগ।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে গ্রামে গ্রামে এখন তৈরি হয়েছে পিচের রাস্তা। অনেক জায়গায় রাস্তা পাকা করার কাজ চলছে। তারই মধ্যে বাড়তি পণ্য বোঝাই করে অবাধে ছুঠে ভারী গাড়ি। আর তার জেরে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে গ্রামীণ পথ। পিচ উঠে বেরিয়ে পড়ছে রাস্তার কঙ্কাল। কোথাও আবার রাস্তা ভেঙে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে চলা দায়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বালি বোঝাই গাড়ি চলাচলের ফলে রাস্তার আরও বেশি ক্ষতি হচ্ছে। অতিরিক্ত বালি বোঝাই করে দশ-বারো চাকার লরি কম-বেশি পশ্চিম মেদিনীপুর সব ব্লকেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এ ছাড়াও গ্রামে গ্রামে এখন দেদার ইমারতি সরঞ্জাম বিকোচ্ছে। ফলে, স্টোনচিপস, পাথর, সিমেন্ট, বালি বোঝাই গাড়িও চলছেছে গ্রামীণ সড়কে। একই পরিস্থিতি পুর-শহরের গলিপথেও। একে রাস্তার ক্ষতি, তায় অনিয়ন্ত্রিত গাড়ি চলাচলে ধোঁয়া-ধুলোয় দূষিত হচ্ছে গ্রামীণ পরিবেশ। কিন্তু সে সব ঠেকাতে কারও কোনও উদ্যোগ নেই বলেই অভিযোগ।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের বাস্তবায়ন কবে হয়, গ্রামের পথে ভারী গাড়িতে কবে রাশ পড়ে, সে দিকেই তাকিয়ে জেলাবাসী।