বিজেপি নেতা খুনের তদন্তে ময়নার একাধিক জায়গায় এনআইএ তল্লাশি। —নিজস্ব চিত্র।
ময়নায় বিজেপি নেতা বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়ার খুনের তদন্তে তৎপরতা বাড়ল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। মঙ্গলবার সকাল থেকে ময়নার বিভিন্ন জায়গায় হানা দেন এনআইএ আধিকারিকেরা। শতাধিক এনআইএ আধিকারিক একাধিক দলে ভাগ হয়ে অভিযান শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই বিজেপি নেতা খুনে অভিযুক্ত ‘পলাতক’ তৃণমূল নেতাদের বাড়ি সিল করে দিয়েছেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী, পুলিশ এবং প্রশাসনের উপস্থিতিতে এনআইএ অভিযান চালায়। প্রায় ২০০ জন আধিকারিক ১৪টি দলে ভাগ হয়ে এক যোগে ময়না জুড়ে অভিযানে নামেন। বিজয়কৃষ্ণ খুনে অভিযুক্ত প্রায় ১০ জন তৃণমূল নেতার বাড়িতে অভিযান চালান তাঁরা। যে সমস্ত বাড়িতে কেউ নেই, সেই সব বাড়ির দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তল্লাশি চালান এনআইএ আধিকারিকেরা। তল্লাশি শেষে বাড়িগুলি সিল করে দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, মনোরঞ্জন হাজরা, অমিতাভ ভঞ্জ, নবকুমার খুটিয়া, সুজিত কর, সৌমিত্র মণ্ডল, স্বপন ভৌমিক, বুদ্ধদেব মণ্ডলের বাড়ি সিল করে দিয়েছেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার দুপুর পেরিয়ে গেলেও অভিযান শেষ হয়নি এখনও। আরও কয়েক জন নেতার বাড়িতে হানা দিয়েছেন তাঁরা।
বাকচা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রসেনজিৎ ভৌমিক বলেন, ‘‘স্থানীয় পুলিশ, পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধানের উপস্থিতিতেই এনআইএ আধিকারিকেরা তালা ভাঙছেন। তল্লাশির পর বাড়িগুলিকে সিল করে দিচ্ছেন।’’ তিনি আরও বলেন, “দু’টি বাড়িতে তল্লাশির সময় আমি এনআইএ-র আধিকারিকদের সঙ্গে ছিলাম। বাড়িগুলিতে কেউ না থাকায় সেগুলিকে সিল করে দিয়েছে এনআইএ। যাঁরা বিজয়কৃষ্ণ খুনে অভিযুক্ত, তাঁদের অনেকেই এনআইএ তদন্তের জেরে গা ঢাকা দিয়েছেন। আমরা আশাবাদী, যে ভাবে তদন্ত এগোচ্ছে, তাতে দোষীরা শাস্তি পাবেনই।’’
প্রসঙ্গত, পশ্চিম মেদিনীপুরের ময়নার বিজেপির বুথ কমিটির সভাপতি ছিলেন বিজয়কৃষ্ণ। ২০২৩ সালে তাঁকে খুন করা হয়। অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বিজয়কৃষ্ণকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তার পর বোমা মেরে, গুলি করে তাঁকে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে প্রতিবাদ বিক্ষোভ গড়ে তুলেছিল বিজেপি। ময়না থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল দীর্ঘ ক্ষণ।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ন’জনকে গ্রেফতার করে। পরে এঁদের মধ্যে পাঁচ জন জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। তার পরই মৃতের পরিবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়। তারা ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি করে। সেই দাবি মেনেই আদালত ঘটনার তদন্তভার এনআইএ-র হাতে তুলে দেয়। এর আগেও একাধিক বার এনআইএ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিল।