এনআইয়ের হাতে গ্রেফতার এক তৃণমূল কর্মী। —নিজস্ব চিত্র।
পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার বিজেপি নেতা বিজয় ভুঁইয়া খুনে আবার সক্রিয় এনআইএ। বুধবার আচমকা হানা দিয়ে ময়নার বাকচার গোড়ামহল গ্রাম থেকে বিজেপি নেতাকে খুনে জড়িত থাকার সন্দেহে এক যুবককে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এলাকায় তিনি তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলে আচমকাই গোড়ামহল গ্রামে হানা দেন এনআইএ আধিকারিকেরা। অভিযান চালিয়ে শুভেন্দু ভৌমিক নামে স্থানীয় এক যুবককে গ্রেফতার করেন তাঁরা। রাতেই তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এনআইএ সূত্রে খবর, বিজেপি নেতাকে খুনের ঘটনায় শুভেন্দু জড়িত ছিলেন।
বিজয়কৃষ্ণ খুনের ঘটনায় এফআইআরে নাম থাকা একাধিক ব্যক্তি এখনও পলাতক। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে গোড়ামহলে অভিযান চালিয়ে ১০ জন তৃণমূল নেতার বাড়ি সিল করে দেয় এনআইএ। তবে এখনও অনেক অভিযুক্ত অধরা। বুধবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তদন্তকারীরা শুভেন্দুকে গ্রেফতার করেন।
ময়নার বাকচা পঞ্চায়েত এলাকার গোড়ামহল গ্রামে বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণকে ২০২৩ সালের ১ মে বাড়ির কাছ থেকেই অপহরণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। মারধরের পরে গুলি করে তাঁকে খুন করা হয় বলে দাবি। তারপর দেহ জলাশয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। বিজয়ের স্ত্রী লক্ষ্মীরানি ভুঁইয়া তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরা, তৎকালীন পঞ্চায়েত প্রধান সুখলাল মণ্ডল-সহ মোট ৩৪ জনের বিরুদ্ধে ময়না থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযুক্তদের মধ্যে সাত জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। হাই কোর্টের নির্দেশে বিজয়ের পরিবারকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তাও দেওয়া হয়।
পরে পুলিশের তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তদন্তের আর্জি জানিয়েছিল নিহতের পরিবার। সেই মামলায় মৃত্যু রহস্যের পুলিশি তদন্তে একাধিক অসঙ্গতি উঠে এসেছিল। গত এপ্রিল মাসে খুনের ঘটনার তদন্তে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। তদন্তভার হাতে নিয়ে এই মামলায় একাধিক বার গোড়ামহল গ্রামে ক্যাম্প করে স্থানীয় এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান নেয় এনআইএ। তার পরেই একের পর এক অভিযান চালায় তারা।