পঁচেটগড়ের জমিদার বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
ভরা চৈত্রেই গরমে হাসফাঁস গোটা দক্ষিণবঙ্গ। সপ্তাহান্তে ইতিউতি বেড়াতে যেতে চাইছেন অনেকতেই। সেই সব পর্যটকদের ঠিকানা হতে পারে ষোড়শ শতাব্দীর প্রাসাদোপম জমিদার বাড়িও। জমিদার বাড়ির অন্দরমহলে রাত্রিযাপন-সহ ‘জমিদারি’ আহারের এলাহি আয়োজন থাকছে পর্যটকদের জন্য। পাশাপাশি রাজবাড়ির অলিন্দে কিংবা জলসাঘরে পা রেখে পর্যটকেরা উপলব্ধি করতে পারবেন জমিদার বাড়ির নানা কথা ও কাহিনী।
সৈকত শহর দিঘা থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে পঁচেটগড় জমিদার বাড়ি। অর্থাভাব এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জমিদার বাড়ির অনেকটাই এখন ক্ষতিগ্রস্ত। জমিদার বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জমিদার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তৈরি হয়েছিল পঁচেটগড় সেবায়েত বোর্ড। ঐতিহাসিক এই স্থাপত্যেকে রক্ষা করতে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ বিভাগে আবেদন জানায় সেবায়ত বোর্ড। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ বিভাগ পঁচেটগড় জমিদার বাড়িকে ‘হেরিটেজ’ মর্যাদা দেয়। চার বছর আগে হেরিটেজ ঘোষণা করা হলেও, জমিদার বাড়ি সংরক্ষণের কাজ এতটুকুও হয়নি বলে দাবি জমিদার পরিবারের সদস্যদের। এখনও জমিদার বাড়ির ঠাকুর দালানে প্রতি বছর দুর্গাপুজো হয়। জলসাঘরে সেতার ও যদুভট্টের এসরাজ এবং গানের খাতা এখনও ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করছে। হেরিটেজ ঘোষণার পরে সেবায়েত বোর্ড-এর তৎপরতায় কয়েক বছর আগে জলসাঘরে সুরের আসর বসেছিল। স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে সুরের আসর বসলেও, সঙ্গীতের উস্তাদদের দেখা যায়নি। জমিদার বাড়ির ঐতিহ্যের রাস মেলায় কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হয় প্রতি বছর। ভিন্রাজ্যের বহু পর্যটকও মেলা দেখতে ও জমিদার বাড়িতে বেড়াতে আসেন।
সম্প্রতি পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে জমিদার বাড়ির অন্দরে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কলকাতা থেকে ১১৬বি জাতীয় সড়ক ধরে দিঘা যাওয়ার পথে, বাজকুল ও এগরা সড়কে ৫৫ কিলোমিটার এলে পঁচেট বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে গ্রামীণ পাকা সড়ক ধরে গাড়িতে ১০ মিনিট এগোলেই পঁচেটগড় জমিদার বাড়ি। পর্যটকেরা চাইলে অনলাইনে পঁচেটগড় জমিদার বাড়িতে থাকার বুকিং করতে পারবেন। পঁচেটগড় সেবায়েত বোর্ডের সভাপতি তথা জমিদার বাড়ির সদস্য সুব্রত নন্দন দাসমহাপাত্র বলেন, ‘‘জমিদার বাড়ির ইতিহাস ছুঁয়ে দেখার জন্য পর্যটকদের জন্য একাধিক ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’