যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের ফলকে বিপ্লবীদের নাম। নিজস্ব চিত্র
বিপ্লবের শহর, বিপ্লবীর শহর মেদিনীপুর। সেখানেই স্বাধীনতা সংগ্রামের শহিদদের স্মরণে উদ্বোধন হল যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের। শনিবার জগন্নাথমন্দিরচকে এই প্রতীক্ষালয়ের উদ্বোধন করেন মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের (বালক) প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক হরিপদ মণ্ডল। হরিপদবাবুর কথায়, “ইতিহাস মনে রাখার এই উদ্যোগ খুবই ভাল।’’
প্রতীক্ষালয়ের মধ্যে বড় ফলকে নাম রয়েছে অনাথবন্ধু পাঁজা, মৃগেন্দ্রনাথ দত্ত, ব্রজকিশোর চক্রবর্তী, রামকৃষ্ণ রায়ে। এঁরা সকলেই স্বাধীনতার যুদ্ধে শহিদ। পাশাপাশি অমরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, পরিমল রায়, নরেন্দ্রনাথ দাস, ফণিভূষণ কুণ্ডু, ফণীন্দ্রকুমার দাস, ভাস্কর দাস মহাপাত্র, বনবিহারী পাল, বঙ্কিমবিহারী পাল, ঈশানচন্দ্র মহাপাত্র, কালীপদ দাস মহাপাত্র, মদনমোহন খানদের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামও রয়েছে। অনাথবন্ধু পাঁজা, মৃগেন্দ্রনাথ দত্তের গুলিতে ১৯৩৩ সালে মেদিনীপুরের ব্রিটিশ জেলাশাসক বার্জ নিহত হন। তারপর ঘটনাস্থলেই ইংরেজ পুলিশের গুলিতে প্রাণ যায় অনাথবন্ধুর। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় মৃগেন্দ্রনাথের। এ দিনের অনুষ্ঠানে শহিদ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পরিবারের সদস্যরাও হাজির ছিলেন।
১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এই এলাকায় আগে প্রতীক্ষালয় থাকলেও তা আধুনিক ছিল না। মাস কয়েক আগে নতুন করে প্রতীক্ষালয় তৈরিতে উদ্যোগী হন কাউন্সিলর সৌমেন খান। স্কুলবাজার, বড়বাজার, মানিকপুর, ছোটবাজার, বিবিগঞ্জ, কোতোয়ালিবাজার প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারা এখানে আসেন। নতুন প্রতীক্ষালয়ে ১০-১২জন যাত্রীর বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রয়েছে আলো-পাখা। কাউন্সিলর সৌমেনবাবু বলছিলেন, “আশপাশের এলাকার প্রচুর মানুষ এখানে আসেন। কাউকে কাউকে নির্দিষ্ট রুটের বাস ধরার জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষাও করতে হয়। ঝড়-বৃষ্টির সময় সমস্যা হত। তাই এই প্রতীক্ষালয়।’’ সৌমেনবাবুর আরও সংযোজন, “স্বাধীনতা আন্দোলনে আমাদের মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্যই এই উদ্যোগ। এলাকার ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার তাগিদও এ ক্ষেত্রে কাজ করেছে।’’