সৌন্দর্যায়ন: সেজে উঠছে ঢেউ সাগর। নিজস্ব চিত্র।
একদিকে খাল। অন্যদিকে নয়ানজুলি। উল্টো দিকে, ভাগাড়। পচা দুর্গন্ধে ওই এলাকার পথ মাড়াতেন না কেউই। বছর তিনেক আগের নিউ দিঘার যাত্রানালার এই ছবিটা এখন পাল্টাতে চলেছে। নতুন নামে শীতের মরসুমে সেজে উঠছে যাত্রানালা।
গত ডিসেম্বরে ‘বেঙ্গল বিজনেস সামিট’-এ গিয়ে যাত্রানালার নতুন নামকরণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ‘ঢেউ সাগর’ নাম দিয়েছিলেন ওই এলাকার। তারপর থেকে পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে ‘ঢেউ সাগর’। লকডাউন শিথিল পর্বে ‘ঢেউ সাগর’কে সাজিয়ে তুলতে বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়েছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)।
বছর খানেক আগে যাত্রানালায় বিশাল ঝাউবন ঘিরে তৈরি হয়েছিল সুন্দর পার্ক। পরে ওই পার্কের নাম ঢেউসাগর পার্ক হয়। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মাফিক এবার থেকে ‘ঢেউ সাগর’ পার্কে হবে সাংস্কৃতিক মঞ্চ। সপ্তাহের শেষে শনি এবং রবিবার দু’দিন ধরে বসবে সাংস্কৃতিক আসর। একই সঙ্গে পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানো এবং বিনোদনের জন্য ঢেউ সাগর পার্কের ভিতরে বোটিং এবং টয় ট্রেন চালু করা হচ্ছে। ছোট বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য ‘রাইডে’র ব্যবস্থা থাকছে। একই সঙ্গে একটি সুসজ্জিত বাগান এবং ফুড প্লাজা তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। রাতে পার্কের প্রবেশ পথ ধরে রঙিন আলোর বাহার ‘ঢেউ সাগরে’র মুখ্য আকর্ষণ হতে চলেছে বলে ডিএসডিএ কর্তৃপক্ষের দাবি।
পর্ষদ সূত্রের খবর, আগামী বড়দিনের উৎসবের আগেই ঢেউ সাগর পার্কে পুরোদমে চালু করার চেষ্টা চলছে। গোটা এলাকা সৌন্দর্যায়নের জন্য ১২ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের কার্যনির্বাহী আধিকারিক মানব মণ্ডল বলেন, ‘‘আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ঢেউ সাগর পার্ক। তার পরে ওই পার্ক নতুনভাবে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। বড়দিনের ছুটি আগেই পর্যটকদের জন্য ঢেউ সাগর পার্ক নতুন সাজে সাজিয়ে তোলার কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশাবাদী।’’
একই সঙ্গে বড়দিনের ছুটিতে চুটিয়ে ‘ঢেউ সাগর’ পার্কে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর আয়োজন করা যেতে পারবে বলেও জানা গিয়েছে। রামনগর এলাকার বাসিন্দা তথা পেশায় নৃত্যশিল্পী কল্যাণ দাস বলেন, ‘‘প্রকৃতির মাঝে মুক্ত সাংস্কৃতিক মঞ্চ নেই বললেই চলে। দিঘায় পর্যটক বেড়াতে গিয়ে যদি সাংস্কৃতিক চর্চা করতে পারেন, তা অত্যন্ত আনন্দদায়ক। এর ফলে নানা প্রান্তের লোকের সঙ্গে স্থানীয়দের সংস্কৃতির আদান প্রদান এবং মেলবন্ধন ঘটবে।’’