মেলেনি টাকা, এনএসএস ব্যাহত কলেজে

কলেজ স্তরে পড়ুয়াদের পঠন-পাঠনের পাশাপাশি সামাজিক বোধ গড়ে তুলতে এনএসএস কর্মসূচি চালু করেছিল কেন্দ্র সরকার। যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রকের মাধ্যমে এই কর্মসূচির জন্য প্রতি বছর প্রয়োজনীয় অর্থ রাজ্যকে পাঠায় কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২০ ০১:২২
Share:

প্রতীকী চিত্র

পরপর দু’বছর মেলেনি টাকা। তাই বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলির এনএসএস (ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিম) চালু রাখতে হিমশিম খাওয়ার অবস্থা। অর্থাভাবে চলতি শিক্ষাবর্ষে শীতকালীন ‘বিশেষ ক্যাম্প’ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধিকাংশ কলেজ কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম জেলার প্রায় সব ক’টি কলেজ এনএসএস কর্মসূচিতে নিজস্ব তহবিল থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ফেলেছে বলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

কলেজ স্তরে পড়ুয়াদের পঠন-পাঠনের পাশাপাশি সামাজিক বোধ গড়ে তুলতে এনএসএস কর্মসূচি চালু করেছিল কেন্দ্র সরকার। যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রকের মাধ্যমে এই কর্মসূচির জন্য প্রতি বছর প্রয়োজনীয় অর্থ রাজ্যকে পাঠায় কেন্দ্র। রাজ্য সরকারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সেই অর্থ পৌঁছে যায়। কলেজ পড়ুয়াদের নিয়ে বিভিন্ন রকমের সেমিনার, সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান, বিশেষ দিন পালন, বিভিন্ন এলাকার প্রান্তিক মানুষদের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তোলা হয় এই কর্মসূচিতে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন কলেজ সূত্র খবর, এনএসএস কর্মসূচিতে যোগ দিতে নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন করতে হয় পড়ুয়াদের। তারপর যে সব পড়ুয়াদের উপযুক্ত বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়, তাঁদের নিয়েই গড়ে ওঠে ইউনিট।

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম মিলিয়ে ৬৭টি কলেজ রয়েছে। অধিকাংশ কলেজেই এনএসএস কর্মসূচি চালু রয়েছে। চলতি মাস থেকেই প্রায় সব কলেজে শীতকালীন বিশেষ অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই বেঁকে বসেছে বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে তিনটি ইউনিটে এই কর্মসূচি চলে। কিন্তু গত দু’বছরে ওই কলেজের আড়াই লক্ষেরও বেশি টাকা পাওনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। প্রায় একই অভিযোগ এগরা সারদা শশীভূষণ কলেজের। ওই কলেজে চারটি ইউনিট রয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে এনএসএস কর্মসূচির জন্য তারা কোনও টাকা পায়নি বলে অভিযোগ। কলেজের তহবিল থেকে দু’লক্ষের বেশি টাকা খরচ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আগামী ২৩ জানুয়ারি থেকে এগরা কলেজে এনএসএস কর্মসূচির শীতকালীন অধিবেশন হওয়ার কথা।

Advertisement

রামনগর কলেজ কর্তৃপক্ষ টাকা না পাওয়ায় চারটি ইউনিট চালাতে গিয়েও হিমশিম খাচ্ছে। এ ব্যাপারে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলির অধ্যক্ষ সংগঠনের সম্পাদক তথা কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের অধ্যক্ষ অমিত কুমার দে বলেন, ‘‘পরপর দু’বছর এনএসএস কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে টাকা মেলেনি। তবে কর্মসূচির গুরুত্ব বিবেচনা করে কলেজগুলি নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করে তা চালিয়ে যাচ্ছে।’’

কেন কলেজগুলিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ টাকা দিচ্ছেন না, তা নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলিও ক্ষুব্ধ। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এনএসএস কর্মসূচির কো-অর্ডিনেটর তপন কুমার দে বলেন, ‘‘উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে গত দু’বছর কোনও টাকা মেলেনি। নিয়মমাফিক অডিট রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরেও কেন টাকা মেলেনি সে ব্যাপারে আমরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি।’’ রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে এনএসএস কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক রমাপ্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সাময়িক সমস্যার কারণে এই কর্মসূচিতে টাকা পাওয়া যায়নি। তবে কী কারণে সমস্যা হচ্ছে, তা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কো-অর্ডিনেটরদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement