WB Panchayat Election 2023

ভোট পরীক্ষায় সম্প্রীতির নজির গড়া নাসিরুদ্দিন

নিন্দুকেরা অবশ্য জানাচ্ছেন, গত ২০১৮’র পঞ্চায়েত ভোটে দহিজুড়ি পঞ্চায়েতের তৃণমূলের বোর্ড গড়ার পিছনে অন্যতম কারিগর ছিলেন নাসিরুদ্দিন।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

বিনপুর শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৩ ০৮:৫৯
Share:

প্রচারে শেখ নাসিরুদ্দিন। নিজস্ব চিত্র kingshuk.gupta@abp.in

সর্বজনীন উৎসব থেকে মন্দির প্রতিষ্ঠা কিংবা শবদাহ— সবেতেই স্থানীয় মানুষের পাশে থাকেন তিনি। বিনপুর-১ ব্লকের দহিজুড়ি অঞ্চলের বাসিন্দা তথা এলাকায় সম্প্রীতির নজির গড়া বছর ৪৬’এর শেখ নাসিরুদ্দিন এ বার তৃণমূলের হয়ে ভোটের পরীক্ষায়।

Advertisement

নিন্দুকেরা অবশ্য জানাচ্ছেন, গত ২০১৮’র পঞ্চায়েত ভোটে দহিজুড়ি পঞ্চায়েতের তৃণমূলের বোর্ড গড়ার পিছনে অন্যতম কারিগর ছিলেন নাসিরুদ্দিন। সে বার দহিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০টি আসনের মধ্যে পাঁচটি জিতেছিল তৃণমূল। বাকি পাঁচটিতে বিজেপি জয়ী হয়। আসন সংখ্যা সমান সমান হয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ ছিল বোর্ড কারা পাবে! তবে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের দিনে অনুপস্থিত ছিলেন বিজেপির এক মহিলা সদস্য। বিজেপির ওই সদস্য আরও কখনও পঞ্চায়েত কার্যালয়-মুখো হননি। ফলে ৫-৪ ব্যবধানে বোর্ড গড়েছিল তৃণমূল। প্রধান নির্বাচনেও অলক্ষ্যে এলাকার প্রাক্তন অঞ্চল যুব তৃণমূল সভাপতি নাসিরুদ্দিনের হাত ছিল বলে খবর।

ক্রমে পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধানের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়ে যায় নাসিরুদ্দিনের। প্রধানের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগও ওঠে। নাসিরুদ্দিন এই ক’বছরে মন দিয়েছিলেন সমাজ সেবায়। হিন্দুর শেষযাত্রায় তাঁকে কাঁধ দিতেও দেখা যায়। এলাকায় মন্দির প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রণ পান তিনি। করোনা-কালে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের পরিযায়ী শ্রমিকদের স্থানীয় স্কুলে রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন। করোনা-কালে এলাকায় কোভিড টিমের নেতৃত্বেও ছিলেন নাসিরুদ্দিন। সেই নাসিরুদ্দিনকে এ বার দহিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫ নম্বর (দহিজুড়ি পূর্ব) আসনে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। এ বার দহিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩টি। ১২টি আসনে প্রাথী দিয়েছে তৃণমূল। একটি আসনে রয়েছেন তৃণমূল সমর্থিত নির্দল। বিজেপি ১২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সিপিএম প্রার্থী দিয়েছে পাঁচটি আসনে।

Advertisement

২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তৃণমূলের দহিজুড়ি অঞ্চল যুব-সভাপতি ছিলেন নাসিরুদ্দিন। তাঁর বুথের ভোটার সংখ্যা ১০৯৪ জন। এর মধ্যে সংখ্যালঘু ভোটার ২০৪ জন। নাসিরুদ্দিনের কথায়, ‘‘প্রার্থী হওয়ার ইঁদুর দৌড়ে ছিলাম না। এলাকাবাসী আমার নাম প্রস্তাব করায় দল আমাকে প্রার্থী করেছে।’’ দহিজুড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান পদটি এ বার তফসিলি জাতির (এসসি) মহিলা প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত। তবে উপপ্রধান পদটি সর্বসাধারণ। ফলে নাসিরুদ্দিন জিতলে তিনিই উপপ্রধান হচ্ছেন বলে শাসকদলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে। নাসিরুদ্দিনের স্ত্রী রশিদা বিবি বলছেন, ‘‘উনি ভেদাভেদ মানেন না। সব সম্প্রদায়কে সম্মান করেন।’’ নাসিরুদ্দিনের ছেলে শেখ নাসিমুদ্দিন ঝাড়গ্রাম পুরসভার বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের কর্মী। মেয়ে তুহিনা খাতুন ঝাড়গ্রাম রাজ মহিলা কলেজের ছাত্রী। দহিজুড়ি অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সঞ্জিত মাহাতো বলেন, ‘‘নাসিরুদ্দিনের ভাবমূর্তির কারণেই তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে।’’

২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটে প্রথমবার প্রার্থী হয়ে মাত্র পাঁচ ভোটে হেরেছিলেন নাসিরুদ্দিন। এ বার দ্বিতীয় বার গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটের পরীক্ষায় এলাকার সম্প্রীতির মুখ!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement