ফাইল চিত্র।
এ বার আইআইটি খড়্গপুরের সমাবর্তন হবে ২৩ ফেব্রুয়ারি। সেখানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে থাকবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই দিনই আইআইটির ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চের উদ্বোধনও হওয়ার কথা। সেই প্রতিষ্ঠানের নাম বদল নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
খড়্গপুরের বলরামপুরে ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স ও রিসার্চ নামে ওই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে ৭৫০টি শয্যা চালুর কথা থাকলেও আপাতত ৪০০ শয্যা চালু করা হবে। এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে জমি ছাড়া ২৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আইআইটির একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রে ইউপিএ সরকারের আমলে প্রস্তাবিত এই হাসপাতালটির নাম দেওয়া হয়েছিল বি সি রায় ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স ও রিসার্চ (রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের নামে)। কিন্তু সম্প্রতি বোর্ডের বৈঠকে ওই হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স ও রিসার্চ। আইআইটি খড়্গপুরের নিজস্ব পোর্টালেও সেই নামের উল্লেখ রাখা হয়েছে। পরিবর্তিত ওই নামেই নবনির্মিত হাসপাতালের উদ্বোধন করার কথা প্রধানমন্ত্রীর। যদিও আইআইটির রেজিস্ট্রার তমাল নাথ অবশ্য শনিবার বলেন, “বি সি রায় ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স ও রিসার্চ নামেই এখনও রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। সেই নামই রয়েছে বলেই জানি। এ বার সেটিরও উদ্বোধন হওয়ার কথা।’’ একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, সমাবর্তনে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত থাকবেন বলে গত ১১ ফেব্রুয়ারি নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু মেডিক্যাল সায়েন্স ও রিসার্চের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী করবেন কি না সেটা এখনও নিশ্চিত হয়নি।
পুরো বিষয়টি নিয়ে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। দলের জেলা মুখপাত্র দেবাশিস চৌধুরীর দাবি, ‘‘রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের সঙ্গে চিকিৎসা বিজ্ঞানের যোগের কথা সবাই জানেন। আইআইটির গেরুয়াকরণ চলছে। তাই ওই প্রতিষ্ঠান শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করে উদ্বোধনের কথা বলা হচ্ছে।’’
আইআইটির এক আধিকারিক জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত খড়্গপুর আইআইটির নেতাজি অডিটোরিয়ামে সমাবর্তন অনুষ্ঠান চলবে। সেখানে সদ্য উত্তীর্ণ প্রথম সারির ৭৫ জন পড়ুয়া সশরীরে থাকবেন। এছাড়াও ২১ জনকে পৃথক প্রাক্তনী সম্মান, ৪ জনকে ডিএসসি সম্মান ও ২ জনকে আজীবনের ফেলো সম্মান দেওয়া হবে। বাকি প্রায় ২,৮০০ পড়ুয়াকে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই সমাবর্তনে যোগ দিতে হবে। আইআইটির জিওলজি বিভাগের সদ্য উত্তীর্ণ বিহারের বাসিন্দা আশুতোষ ভাস্করের আক্ষেপ, “করোনার কারণে যে যাঁর মতো বাড়ি ফিরে গিয়েছিলাম। অনেক বন্ধুর সঙ্গে দেখাই হয়নি। পরীক্ষাও হয়নি। ভেবেছিলাম সমাবর্তনে সকলের সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে। কিন্তু সেটাও ভার্চুয়াল মাধ্যমে হবে জেনে খারাপ লাগছে।’’
আইআইটির ডিরেক্টর বীরেন্দ্রকুমার তিওয়ারি বলেন, “একজন প্রাক্তনী হিসেবে পড়ুয়াদের অবস্থা বুঝতে পারছি। কিন্তু তাঁদের কল্যাণের কথা ভেবেই অত্যন্ত কঠিন এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। করোনা সংক্রমণ পুরোপুরি কমে গেলে পড়ুয়াদের সবাইকে নিয়ে অন্য একটি অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করব।”