ভূত মনগড়া, বোঝাল প্রশাসন

শেষে শুক্রবার নারায়ণগড়ের রাইপুর গ্রামে পৌঁছল বিজ্ঞান সংগঠন, পুলিশ ও প্রশাসন। সচেতনতা শিবির করে গ্রামবাসীকে বোঝানো হল, ভূত বলে কিছু হয় না। সবটাই মানুষের মন গড়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নারায়ণগড় শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০২
Share:

গ্রামবাসীদের বোঝাচ্ছেন ব্লক প্রশাসন ও বিজ্ঞান সংগঠনের কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

পথ দুর্ঘটনায় এক বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর পরে গ্রামে ছড়িয়েছিল ভূতের ভয়। রাতে পথে বেরোতে ভয় পাচ্ছিল আট থেকে আশি। ভূত তাড়াতে তিন তিনজন তান্ত্রিকও আনা হয়েছিল গ্রামে।

Advertisement

শেষে শুক্রবার নারায়ণগড়ের রাইপুর গ্রামে পৌঁছল বিজ্ঞান সংগঠন, পুলিশ ও প্রশাসন। সচেতনতা শিবির করে গ্রামবাসীকে বোঝানো হল, ভূত বলে কিছু হয় না। সবটাই মানুষের মন গড়া। দেশ যেখানে চন্দ্রাভিযান করছেন, সেখানে এ সব যে একেবারেই অন্ধবিশ্বাস, তা বুঝিয়ে দেন বিডিও বিশ্বজিৎ ঘোষ, পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ ও ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটির সদস্যেরা। সঙ্গে ছিলেন নারায়ণগড় থানার আধিকারিক। রাতে এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা ও ৫০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েনের কথাও জানানো হয়েছে।

গত ৪ অগস্ট গ্রামের বাসিন্দা সমর বারিক নামে এক ব্যবসায়ী ওড়িশা থেকে ফেরার পথে বেলদা থানার কালিবাগিচার কাছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ছোট গাড়িটা রাস্তা থেকে নেমে গাছে ধাক্কা মারে। সামনের আসনে বসা সাতান্ন বছরের সমর মারা যান। সমর বিজেপি কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। গ্রামবাসী ও প্রতিবেশীদের বক্তব্য, সমরের মৃত্যুর পরে তাঁর বড় ছেলে পথিক কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ হয়ে পড়ে। আবোলতাবোল বলা শুরু করে। তারপর তাকে গ্রামের হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এক গুণিনের দ্বারস্থ হয় পরিবার। ওই পরিবার সূত্রে দাবি, ছোট ছেলে মনোরঞ্জনেরও দাদার মতোই অবস্থা হয়েছিল বাবার মৃত্যুর তিনদিন আগে। স্বপ্নে নাকি সে মৃত্যুর বিষয়টি দেখেছিল। এই ধরনের ব্যাখ্যাতেই আতঙ্ক ছড়ায়। মৃত সমরের দাদা ক্ষুদিরামের বক্তব্য, ‘‘যে সব ঘটনা চোখের সামনে ঘটতে দেখেছি তা বিশ্বাস করতেই হচ্ছে। তাই হুগলির আরামবাগ থেকে তান্ত্রিক এনে পুজোআচ্চার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

Advertisement

এ দিন গ্রামে গিয়ে প্রশাসন ও বিজ্ঞান সংগঠনের সদস্যরা অবশ্য বোঝান, ভূত বলে কিছু হয় না। ও সব দুর্বল মনের ব্যাপার। বিডিও বিশ্বজিৎ ঘোষের কথায়, ‘‘ভূতের কোনও অস্তিত্ব নেই। গ্রামে গিয়ে ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।’’ পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সৌমেন মণ্ডল জানান, আগামীতে এলাকায় সচেতনতা কর্মসূচি হবে।

আর সমরের দুই ছেলের অসুস্থতা সম্পর্কে নারায়ণগড়ের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘এ এক ধরনের মানসিক অসুখ হতে পারে। কিছু নিয়ে একটানা চিন্তা করলে এমন সমস্যা হতে পারে। কাউন্সেলিং দরকার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement