(বাঁ দিক থেকে) মৃত পড়ুয়া সৌমেন দাস এবং সেই মেসবাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
বন্ধুদের সঙ্গে ছাত্রাবাসে নৈশপার্টিতে গিয়েছিলেন এক আইটিআই পড়ুয়া। চার তলা একটি মেসবাড়ির নীচে তাঁর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ছাত্রের নাম সৌমেন দাস। ১৯ বছরের ছাত্রের বাড়ি হলদিয়ার ভবানীপুর খানার দেভোগ এলাকায়। মঙ্গলবার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে বাড়ির পাশে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের গান্ধীনগর এলাকায় একটি মেসবাড়িতে যান ওই ছাত্র। তার কয়েক ঘণ্টা পরই রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতের পরিবার জানাচ্ছে, সৌমেন কাঁথির দেশপ্রাণ আইটিআই-এর ছাত্র। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা নাগাদ জনা কয়েক বন্ধু সোমেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। খাওয়া-দাওয়ার নিমন্ত্রণ করা হয় তাঁকে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মেসের চার তলায় ‘পার্টি’ চলছিল। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ সৌমেনকে দেখতে না পেয়ে তাঁর বন্ধুরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তাঁদের দাবি, হঠাৎ তাঁরা দেখেন চার তলা ওই বাড়ির নীচে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন তাঁদের বন্ধু। রক্তাক্ত অবস্থায় সৌমেনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের কাকা ত্রিদেব দাস বলেন, “মঙ্গলবার বাড়ির পাশে অনুষ্ঠান ছিল। খাওয়াদাওয়ার পর বিশ্রাম নিচ্ছিল ও। বিকেল ৫টা নাগাদ ওর কয়েক জন বন্ধু বাড়িতে আসে। ভাইপোকে ডাকে। বলে ‘ফিস্ট’ হবে। কিন্তু ও নিরামিষ খায়। তাই যেতে চায়নি। পরে বন্ধুদের জেদাজেদিতে রাজি হয়। রাত ১০টা নাগাদ আমরা জানতে পারি ওকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।’’ ঠিক কী ঘটেছিল, কী ভাবে ওই ছাত্র পড়ে গিয়েছেন তা নিয়ে ধন্দে পরিবারও। মৃতের ওই আত্মীয়ের কথায়, “আমরা কেউ স্পটে (ঘটনাস্থলে) ছিলাম না। ঠিক কী ঘটেছিল আমরা বুঝতেই পারছি না। তবে জানতে চাই, সেখানে ঠিক কী ঘটেছিল। পুলিশকে জানিয়েছি, ছেলেটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা হোক। নিছক দুর্ঘটনা হলে আমাদের দুর্ভাগ্য বলে ধরে নেব। তবে এর পেছনে কোনও ষড়যন্ত্র থাকলে তা তদন্ত করে বের করা হোক।’’
হলদিয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে মেসের আবাসিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঠিক কী ঘটেছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।