সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র
ছাপানো পোস্টারে ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য-সহ ১৪ জনের নাম দিয়ে লেখা ‘জব কার্ডের টাকা লোপাট। মাটি না কেটে অ্যাকাউন্টে টাকা।’ সোমবার রাতে ঘাটাল ব্লকের দেওয়ানচক ১ পঞ্চায়েতের কুঠিঘাট বাজারের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ওই পোস্টারে যাঁদের নাম রয়েছে কেউ স্থানীয় তৃণমূল নেতা, কেউ তাঁদের আত্মীয়। তবে কারা দিয়েছে সেই পোস্টার তার কোনও উল্লেখ নেই সেখানে।
পোস্টার নিয়ে ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলইয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভাবা যায়। প্রমাণ ছাড়াই বিজেপি নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে। আইনের পথে যাব।’’ যদিও ওই পোস্টারের প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘাটাল থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি তৃণমূল। দেওয়ানচক ১ পঞ্চায়েতের উপ প্রধান তরুণ সামন্ত বললেন, “কোথা থেকে ওই হিসেব এল আমার জানা নেই। কাগজপত্র দেখতে হবে।” ঘাটালের বিডিও অরিন্দম দাশগুপ্ত বলেন, “বিষয়টি শুনেছি।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, একশো দিনের প্রকল্পে কোনও শ্রমিক একশো দিনই কাজ করলে তাঁর মোট প্রাপ্য হওয়ার কথা ১৯ হাজার টাকা। পোস্টারের অভিযোগ অনুযায়ী, যে ১৪ জনের নাম রয়েছে তাঁদের সবার নামে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে কত টাকা ঢুকেছে তার অঙ্ক লেখা রয়েছে। সবথেকে বেশি টাকা গিয়েছে আনন্দ দোলইয়ের অ্যাকাউন্টে, পরিমাণ ১ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা। সুজিত ভুঁইয়া পেয়েছেন ৮৩ হাজার টাকা। পোস্টারে নাম থাকা এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত সুজিত ভুঁইয়ার দাবি, “পঞ্চায়েত তখন আমাকে দিয়ে কাজ করিয়েছে। বিনিময়ে টাকা পেয়েছি। বিভিন্ন সময়ের অ্যাকাউন্টে ওই টাকা এসেছে। প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান কার্তিক পালের নির্দেশেই আমি কাজ করতাম।” সুজিতের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা ভুঁইয়ার নামও উল্লেখ রয়েছে। প্রিয়াঙ্কার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। মেয়ের প্রসঙ্গ উঠতেই সুজিতের বক্তব্য, “মেয়েও জব কার্ডে কাজ করত।” আনন্দ দোলই ফোন ধরেননি। দেওয়ানচক ১ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান কার্তিক পালের দাবি, সবাই জব কার্ডে কাজ করেই টাকা পেয়েছেন। তবে পোস্টারে যে পরিমাণ টাকা অ্যাকাউন্টে গিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে সেটা সত্যি নয়।
বিজেপির ঘাটাল দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি শীতল কোপাটের দাবি, “সাধরণ মানুষের কাছ থেকে জোর করে টাকা নিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। এখন সাধারণ মানুষই সরব হয়েছেন।”
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।