পিছনে কি মারণ গেম! মোবাইল না মেলায় সন্দেহ

মাস খানেক আগে থেকে শিবনাথের আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা যায় বলে দাবি পরিবারের। শিবনাথের দেহ উদ্ধার হলেও খোয়া গিয়েছে তাঁর মোবাইল ফোনটি। যা এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৯ ০০:০৫
Share:

শিবনাথ গুছাইত।

রবিবার পাঁশকুড়ার খণ্ডখোলা রেল ক্রসিংয়ের কাছে উদ্ধার হয় স্থানীয় গোগ্রাস কেশববাড় গ্রামের মেধাবী ছাত্র শিবনাথ গুছাইতের (২২) দেহ। শান্ত, মেধাবী এই ছাত্রের এই মৃত্যুতে হতবাক এলাকার মানুষজন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান এটি একটি দুর্ঘটনা। তবে মৃতের পরিবারের তরফে কয়েকজন শিবনাথের মৃত্যুর কারণ নিয়ে সন্দিহান।

Advertisement

মাস খানেক আগে থেকে শিবনাথের আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা যায় বলে দাবি পরিবারের। শিবনাথের দেহ উদ্ধার হলেও খোয়া গিয়েছে তাঁর মোবাইল ফোনটি। যা এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। আর তা নিয়ে রহস্য। শিবনাথ নিখোঁজ হওয়ার সময় থেকেই বন্ধ ছিল তাঁর ফোন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান দুর্ঘটনা হলেও শুক্রবার রাতে পাঁশকুড়া থেকে তমলুক স্টেশনের মধ্যে চলাচলকারী কোনও ট্রেনচালকই কাউকে ধাক্কা মারার রিপোর্ট করেননি। আর তাতেই শিবনাথের খুন হওয়ার সন্দেহ আরও গাঢ় হচ্ছে। শিবনাথের মৃত্যুর পিছনে আর যে সম্ভাবনা উঠে আসছে তা হল, শিবনাথের বাবা ভবেশ গুছাইত ও শিবনাথের এক বন্ধু দেবাশিস জানা জানান ফোনে গেম খেলতে ভালবাসতেন শিবনাথ। তাই কোনও মারণ গেমের শর্ত পূরণ করতে গিয়ে শিবনাথকে প্রাণ দিতে হল কি না সেই বিষয়টিও ভাবাচ্ছে পরিবারকে।

শিবনাথ দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। সেখানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তেন তিনি। থাকতেন কাছেই একটি মেসে। শেষবার তিনি বাড়ি এসেছিলেন চড়ক সংক্রান্তিতে। নিয়মিত বাড়ির সঙ্গে ফোনে কথা হত শিবনাথের।

Advertisement

পরিবারের দাবি মাস খানেক ধরে শিবনাথ সহজে ফোন ধরতেন না। কথা বললেও খুব অল্প সময় বলতেন। শিবনাথের আচরণে অস্বাভিকতা দেখে মেসের মালিক অসিত বিশ্বাস শিবনাথের বাবাকে ফোন করে জানান। ভবেশবাবু ছেলেকে চলে আসতে বলেন। ফোনে শিবনাথ জানান তিনি ৫ জুলাই ফেরার ট্রেন ধরবেন। ৬ জুলাই তাঁকে নৈহাটি স্টেশনে নেমে পড়েন তিনি। তাঁকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরতে দেখে স্থানীয় এক দোকানদার তাঁর কাছে ঠিকানা জেনে বাড়িতে ফোন করেন। শিবনাথের এক আত্মীয় ওই রাতে তাঁকে খড়দায় নিয়ে আসেন। ৭ তারিখ শিবনাথের বাবা ছেলেক নিয়ে পাঁশকুড়ায় ফেরেন। ৮ জুলাই চিকিৎসার জন্য তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে শিবনাথ আপন মনে বিড়বিড় করতেন বলে জানিয়েছেন পরিবারের লোকেরা। এর পর শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছি বলে বেরিয়ে যান শিবনাথ। তারপরেই রবিবার সকালে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। যদিও পরে খোণজ নিয়ে জানা গিয়েছে, শিবনাথ বন্ধু বাড়িতে যাননি।

পুলিশের দাবি, শিবনাথের মোবাইল ফোনটি পাওয়া গেলে তাঁর মৃত্যু সংক্রান্ত অনেক তথ্য হয়তো পাওয়া যেত। তা ছাড়া তাঁর সঙ্গে থাকা সাতশো টাকাও পাওয়া যায়নি। তাই মোবাইল ফোন ও টাকার জন্য খুনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। পাঁশকুড়া থানার ওসি অজিত কুমার ঝাঁ বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement