এই খামারবাড়িতেই ডেরা বেঁধেছিল আততায়ীরা। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুনের ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার জানিয়েছিলেন, হত্যাকাণ্ডের তদন্তে তাঁদের মূল ‘চাবিকাঠি’ ছিল ধৃত দীপক চক্রবর্তী। দীপককে জেরা করে পুলিশের হাতে এসেছে নানা তথ্য।
পুলিশের একটি সূত্রের খবর, জেরায় সামনে এসেছে কুরবান খুন হওয়ার দিন ১১-১২ আগে ড্রসিনা পাতার কারবারি পরিচয় দিয়ে রাজশহর গ্রামে এক ব্যক্তির খামারবাড়িতে আততায়ীদের রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন মাইশোরার দুই নেতা। বর্তমানে ওই দুই নেতাই ফেরার। তাঁদের এ কাজে সাহায্য করেছিল দীপক।
তদন্তে বিষয়টি সামনে আসার পরে ওই খামারবাড়ির পরিচারককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। থানায় ধৃত দুষ্কৃতী তথা শুট্যার রাজাকে দেখে ওই পরিচারক শনাক্ত করেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই পরিচারক বলেন, ‘‘কুরবান খুনের ১২ দিন আগে রাজশহর গ্রামের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য এবং শ্যামবল্লভপুর গ্রামের এক নেতা একটি সাদা গাড়িতে করে রাত ১২টা নাগাদ খামারবাড়িতে পাঁচজনকে নিয়ে আসেন। ওই প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য জানিয়েছিলেন, ড্রসিনা পাতা কেনার জন্য ওই ব্যক্তিরা নদিয়া থেকে এসেছেন। রাতটুকু সেখানে থেকে তাঁরা ভোরে ফুলের আড়ত দেখতে যাবেন।’’
পরিচারকের আরও দাবি, ওই দিন সাদা রঙের গাড়িটি চালাচ্ছিলেন শ্যামবল্লভপুর গ্রামের ওই নেতা। পরদিন ওই পাঁচজন ব্যক্তি বিকেল ৫টা নাগাদ খামারবাড়ি ছেড়ে চলে যান। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই হিন্দিভাষী ছিল বলে দাবি। খামারবাড়িরই একপ্রান্তে থাকেন সেখানকার মালিক। তিনি জানান, খামারবাড়ি চত্বরে আশপাশের অনেকেই গাড়ি রাখেন। তবে কুরবান খুন হওয়ার দিন পনেরো আগে থেকে একটি সাদা গাড়িকে মাঝেমধ্যে খামারবাড়ির সামনে দেখা যেত। একদিন সকালে প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য এবং শ্যামবল্লভপুরের ওই নেতা ও ধৃত দীপক খামারবাড়ির সামনে খাটিয়ায় বসে পাঁচজন অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে চা খাচ্ছিলেন। সেখানে বসা নিয়ে আপত্তি করায় ওই প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য জানিয়েছিলেন, তাঁরা ব্যবসা সংক্রান্ত আলোচনার জন্য ওখানে বসেছেন।
প্রসঙ্গত, প্রাক্তন ওই পঞ্চায়েত সদস্যের রাজশহর বাজারে ফুলের আড়ত রয়েছে। তাঁর বাড়ি ওই খামারবাড়ির পাশেই। খামারবাড়ির মালিক এ দিন জানান, ‘‘ খুনের ঘটনায় এরা জড়িত জেনে তাঁর খারাপ লাগছে। কারণ ওই প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য তাঁরই প্রতিবেশী। কোনওদিন কোনওরকম সন্দেহ হয়নি।
যদিও তদন্তের স্বার্থে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলা পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার।