Murder

ছ’বছর পার, রকি খুনে শাস্তির দাবি

২০১৪ সালে খুন হন ঝাড়গ্রাম শহরের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ আগরওয়াল ওরফে রকি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০ ০০:০১
Share:

সৌরভ আগরওয়াল ওরফে রকি।

ছ’বছর পেরিয়েছে ছেলে আর নেই। নিহত ছেলের স্মরণে রক্তদান শিবির করলেন বাবা-মা। ছেলেকে খুনে অভিযুক্তদের শাস্তিও দাবি করলেন।

Advertisement

২০১৪ সালে খুন হন ঝাড়গ্রাম শহরের তরুণ ব্যবসায়ী সৌরভ আগরওয়াল ওরফে রকি। প্রতি বছর ৬ মে রকির মৃত্যুদিনে উদ্যোগে রক্তদান শিবির করা হয় ‘সৌরভ আগরওয়াল মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’-এর উদ্যোগে। রকির বাবা পবন আগরওয়াল জানালেন, এ বার লকডাউনে ওই দিন শিবির করা যায়নি। প্রশাসনের অনুমতি পেয়ে মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম শহরের একটি ধর্মশালায় রক্তদান শিবির হয়েছে। ঝাড়গ্রাম ব্লাড ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় এই শিবিরে রক্ত দেন ৪০ জন। ট্রাস্টের মুখ্য-পরিচালক রকির মা সত্যভামা আগরওয়াল বলেন, ‘‘ছ’বছর আগে ছেলেকে নির্মম ভাবে খুন করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা দায়রা আদালতে বিচার চলছে। অভিযুক্তদের চরম সাজা চাই।’’

ঝাড়গ্রাম শহরের বলরামডিহির বাসিন্দা রকি পারিবারিক নির্মাণ সরঞ্জামের ব্যবসা দেখভাল করতেন। ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল ব্যবসার কাজে বেরিয়ে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। তখন তাঁর বয়স ২৬ বছর। পরে শহরের অদূরে পুকুরিয়ার রাস্তায় তাঁর বাইক মেলে। কয়েকদিন পরে পবনকে ফোনে এক অচেনা কন্ঠ জানায়, রকিকে অপহরণ করা হয়েছে। তিন কোটি টাকা মুক্তিপণ না দিলে রকিকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। পরে স্পিডপোস্টে একটি সিডি পান পবন। তাতে দেখা যায়, চোখ বাঁধা রকির মাথায় মাথায় পিস্তল ঠেকানো। রকি বাবাকে বলছেন, অপহরণকারীদের কথা যেন তিনি শোনেন। পুলিশকে সব জানান পবন। পরে পুলিশ জানতে পারে, পবনের ব্যবসায়ী-বন্ধু অশোক শর্মা-সহ কয়েকজন রকির অপহরণে জড়িত। অশোককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে জানা যায়, রকিকে খুন করা হয়েছে। ৬ মে ওড়িশার গঞ্জাম জেলার রম্ভায় রকির দেহ মেলে। তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল। রকিকে অপহরণ ও খুনের অভিযোগে অশোক ছাড়াও তাঁর স্ত্রী পুনম শর্মা, পরিচারক তোতন রানা, অশোকের দুই আত্মীয় দীনেশ শর্মা ও সুমিত শর্মাকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

অশোক-সহ ৫ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। হাইকোর্টে অশোক-সহ ৪ অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন খারিজ হয়। তবে অসুস্থতার কারণে শর্তাধীন জামি পান পুনম। মামলাটি ঝাড়গ্রাম আদালত থেকে সরানোর আবেদন করেন অশোকেরা। কিন্তু হাইকোর্ট আবেদন নাকচ করে যাওয়ায় তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যান। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলাটি ২০১৭ সা‌লে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক লোকেশ পাঠকের আদালতে স্থানান্তরিত হয়। সেখানেই বিচার চলছে। তবে লকডাউনে গত ৩০ এপ্রি‌লের পর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত রয়েছে।

এখনও পর্য‌ন্ত ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। আরও ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ বাকি। মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী (স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর) সৌমেনকুমার দত্ত বলেন, ‘‘লকডাউনের জন্য সাক্ষ্যগ্রহণ এখন স্থগিত রয়েছে। ১৫ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য থাকলেও করোনা পরিস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত রয়েছে।’’ বিচারাধীন বন্দি অশোক এখন আছেন মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। বাকি ৩ অভিযুক্ত তমলুকের উপ-সংশোধনাগারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement