মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
হাতে ধরা কাগজ দেখছেন। আর তারপর পুর পরিষেবা থেকে শুরু করে ঝাড়গ্রামের নানা বিষয় মুখ্যমন্ত্রী জানতে চাইছেন। বারবার উঠে জবাব দিচ্ছেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি।
বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় প্রশাসনিক বৈঠকে এমনই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। পরের দিন, বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজের দফতরে ঝাড়গ্রাম পুরসভার কর্তৃপক্ষকে নিয়ে ‘জরুরি-বৈঠক’ করলেন জেলাশাসক। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে জেলাশাসক জানান, মানুষ পরিষেবা না পেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ করছেন, এটা পুরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে মোটেই সুখকর বিষয় নয়।
এ দিন বিকেল পাঁচটা থেকে ঘণ্টা খানেকের বৈঠকে বারবার জেলাশাসক পুর-পরিষেবা নিয়ে পুরপ্রশাসক সুবর্ণ রায় ও সরকার মনোনীত দুই যুগ্ম প্রশাসককে যথাযথ পদক্ষেপ করতে বলেন। পুরপ্রশাসক জেলাশাসককে জানান, পুজোর আগেই চোখে পড়ার মতো সংস্কার কাজ শুরু হয়ে যাবে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আজ, শুক্রবারই একটি ওয়াটস্অ্যাপ নম্বর চালু করবে পুরসভা। ওই নম্বরে শহরবাসী তাঁদের এলাকার জঞ্জাল-সমস্যার বিষয়ে জানাতে পারবেন। সমস্যার ছবিও পাঠাতে পারবেন। পুরসভা সঙ্গে সঙ্গে জঞ্জাল-সমস্যা মেটাতে পদক্ষেপ করবে। ওই নম্বরে সাধারণ মানুষের অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘মুশকিল আসান’ করতে হবে বলে নির্দেশ দেন জেলাশাসক।
সূত্রের খবর, পুজোর আগে রাস্তার ক্ষত মেরামত করতেও পুর কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে বলেন জেলাশাসক। কয়েকটি জায়গায় আলোর ব্যবস্থাও করতে বলেন তিনি। অনেক ঠিকাদার কাজে গড়িমসি করছেন। তাঁদের নিয়ে সোমবার বৈঠক করবেন প্রশাসক ও দুই যুগ্ম প্রশাসক দুর্গেশ মল্লদেব ও প্রশান্ত রায়। গত বছর ডিসেম্বরে তৃণমূল পরিচালিত ঝাড়গ্রাম পুরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে প্রশাসক নিয়োগ করে রাজ্য সরকার। প্রশাসক হন ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক (সদর) সুবর্ণ রায়। প্রাক্তন পুরপ্রধান দুর্গেশ ও প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা ঝাড়গ্রাম শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রশান্তকে পুরসভার সরকার মনোনীত যুগ্ম প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।
প্রশাসক দায়িত্ব নিলেও গত আট-ন’মাসে পুর পরিষেবা নিয়ে শহরবাসীর একাংশে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আগামী বছর পুরভোট। ফলে, শহরবাসীর ক্ষোভ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে শাসকদল। এরই মাঝে পুর পরিষেবা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে স্বাভাবিক ভাবে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে পুরসভার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সপ্তাহে দু’বার প্রশাসক ও দুই যুগ্ম প্রশাসক বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত সমূহ জেলাশাসকের কাছে পাঠাতে হবে। জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুর-পরিষেবায় আরও জোর দেওয়ার জন্য
এ দিন পুর-কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেছি। প্রয়োজনীয় কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
পুরসভার দৈনিক মজুরিতে (নো ওয়ার্ক নো পে) কাজ করেন প্রায় সাড়ে তিনশো জন। তাঁদের পুজোর বোনাস এবার কিছুটা বাড়ছে। পুরসভার তহবিল থেকে পুজোর আগেই বোনাস মেটানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।