বিধানসভা ভোটের ফলের নিরিখে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা সাত বিধানসভার মধ্যে তমলুক, পূর্ব পাঁশকুড়া ও হলদিয়া আসনে হার হয়েছিল শাসকদল তৃণমূলের। ফলে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের বিপুল জয় সত্ত্বেও দলের শক্তিশালী গড় হিসেবে পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুরে নিরঙ্কুশ আধিপত্যে ধাক্কা খেয়েছে শাসক দল। তাই তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া তৃণমূল নেতৃত্ব।
ইতিমধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে লাগাম দিতে পূর্ব মেদিনীপুরের পাশের জেলা হাওড়ার নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, তমলুক লোকসভার উপ-নির্বাচনে প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারীর হয়ে প্রচারে আসার কথা দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের। তমলুক লোকসভার বিভিন্ন স্থানে একাধিক সভার কর্মসূচি রয়েছে মুকুলবাবুর। শুধু মুকুলই নন, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, গোলাম রব্বানি-সহ এক ঝাঁক তৃণমূল নেতা তমলুকে ভোটের প্রচারে আসবেন।
তবে প্রচারে মুকুল রায়ের আসা নিয়ে দলের অন্দরে চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার পরে ২০১৫ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রাম জমিরক্ষা আন্দোলনের শহিদদের স্মরণ অনুষ্ঠানে এসে একাংশ কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন মুকুল। সে সময় নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া ও গোকুলনগরে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী সহ দলের বহু জেলা নেতৃত্ব । সে দিন নন্দীগ্রামে ঢুকতে না পারায় খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল মুকুল ও তাঁর সঙ্গীদের। তবে দল নেত্রীর সঙ্গে দূরত্ব ঘোচার পরে চলতি বছর বিধানসভা ভোটের প্রচারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় নন্দকুমা, ময়নায় এসেছিলেন মুকুলবাবু। সঙ্গী ছিলেন দলের সাংসদ তথা অভিনেতা দেব। এ বার লোকসভা উপ-নির্বাচনের প্রচারে তমলুকে মুকুলবাবুর আসা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে
করা হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১০ নভেম্বর নন্দকুমারের ভবানীপুর এবং ১২ নভেম্বর তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুই এলাকায় মুকুলবাবুর সভার কর্মসূচি রয়েছে। দলের একাংশের মতে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দলীয় সংগঠনের রাশ শুভেন্দু-শিশির অধিকারীদের হাতে থাকলেও বিধানসভা ভোটের ফলের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ। তাই দলের প্রথম সারির নেতা ও মন্ত্রীদের দিয়ে তমলুক লোকসভা এলাকার নানা প্রত্যন্ত এলাকায় প্রচার চালানোর
এমন পরিকল্পনা।