প্রতীকী ছবি
বর্ষা শুরুর আগেই এক ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে হলদিয়া পুর এলাকায়। সে বিষয়ে পুরসভার কাছে রিপোর্ট তলব করল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। শনিবার পুরসভার এক প্রতিনিধি দল ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের পদ্মপুকুরে ওই আক্রান্তের বাড়ি গিয়ে খোঁজ খবর নেন। পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক স্নেহাশিস মাইতি জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ রিপোর্ট চেয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
এ দিন আক্রান্ত রামপদ জানার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাঁর চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন প্রতিনিধিরা। জেলা হাসপাতাল বা কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসার আশ্বাসও দেন। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর শুভশ্রী সামন্ত ও পুর-কর্মীরা। শুভশ্রীদেবীর দাবি, ‘‘রামপদবাবু যেখানে কাজ করতেন সেটি সংরক্ষিত এলাকা। সেখানে পুরসভার সাফাই কর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। ওই এলাকা থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়ে থাকতে পারে।’’
পরিবার সূত্রে দাবি করা হয়েছে হলদিয়ার হাতিবেড়িয়া স্টেশনের পাশে একটি জলপ্রকল্পে অস্থায়ী শ্রমিকের কাজ করেন রামবাবু। ওই এলাকায় ঝোপঝাড়ে ভর্তি, তা নিয়মিত সাফাই হয় না। দিন পাঁচেক আগে জ্বর, গায়ে ব্যথা নিয়ে বিসি রায় হাসপাতালে ভর্তি হন রামপদবাবু। চিকিৎসক হাবিবুর রহমান সর্দার জানান, রামপদবাবুর রক্তে ডেঙ্গির জীবানু মিলেছে। তাঁর শারীরিক অবস্থাও তেমন ভাল নয়।
শুভশ্রীদেবী জানান, পুরসভার তরফে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরকে চিঠি দেওয়া হবে যাতে ওই এলাকা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু পুরকর্মীদের দাবি, বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ডেঙ্গি নিয়ে প্রচার চালানোর জন্য নতুন করে পুরসভার তরফে ‘ডেঙ্গি কর্মী’ নিয়োগ করা হয়েছে। ডেঙ্গি কর্মী শান্তি দাস ও সীমা মাইতি বলেন, ‘‘আমরা সহযোগিতা পাচ্ছি না। বিশেষ করে আবাসন এলাকায় ঢুকতেই দেওয়া হয় না।’’ হলদিয়ার চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডলও এ দিন হাতিবেড়িয়া এলাকায় ঘুরে দেখেন। তিনি জানান, সচেতন করতে হিন্দিভাষী লোকেদের জন্য হিন্দি লিফলেটও বিলি হচ্ছে।
ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুরসভা প্রচার চালাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু সেখানেও উল্টো ফল। পুরসভার ফেসবুক পেজে জমা পড়ছে ভুরি ভুরি অভিযোগ। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের চৈতি ব্লকের সুদীপ মাইতি লিখেছেন, মশার জ্বালায় টিকতে পারছেন না। কেউই আসে না রাসায়নিক স্প্রে করতে। ফেসবুক পেজেই দাবি উঠছে বিভিন্ন এলাকার সাফাই সুপারভাইজারদের ফোন নম্বর জানানোর। এরপরেই নড়ে বসেছেন কর্তৃপক্ষ।
সাফাই সুপারভাইজারদের ওয়ার্ড অনুযায়ী ফোন নম্বর দেওয়াও হয়েছে ফেসবুকে। দেবপ্রসাদ মণ্ডলের দাবি, ‘‘আমরা উদ্যোগী। কিন্তু সব জায়গায় নজরদারির অভাবে সমানভাবে কাজ হচ্ছে না।’’ চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (জনস্বাস্থ্য) চন্দন মাজী জানান ২৬টি ওয়ার্ডে ৩৮২ জন মহিলা ডেঙ্গি কর্মী, ৩৮ জন সুপার ভাইজাররের নেতৃত্বে কাজ করে চলেছেন। খামতি থাকলে পুরসভাকে সরাসরি জানান।’’