প্রতীকী ছবি।
বছর ঘুরলেই বিধানসভা ভোট। ২০২০-’২১ অর্থবর্ষের বিধায়ক তহবিলের এক কিস্তির টাকা বকেয়া ছিল। অপেক্ষায় ছিলেন বিধায়কেরা। এ বার সেই বরাদ্দ এসেছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৫টি বিধানসভা। কেন্দ্র পিছু এক কিস্তির টাকা, অর্থাৎ ৩০ লক্ষ টাকা করে বকেয়া ছিল। প্রশাসন সূত্রে খবর, সম্প্রতি এই বরাদ্দ এসেছে। জেলার বিধায়ক তহবিলে এসেছে মোট ৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। বিধায়কদের এলাকা উন্নয়নে প্রকল্প জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
জেলার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিক অয়ন নাথ বলেন, ‘‘অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। ওই প্রকল্পের যে গাইডলাইন রয়েছে, সেই অনুযায়ীই কাজ হচ্ছে।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, নিজেদের এলাকা উন্নয়নের জন্য বিধায়কেরা বছরে ৬০ লক্ষ টাকা করে পান। সাধারণত, ৬ মাস অন্তর দুই কিস্তিতে ওই টাকা দেওয়া হয়। প্রথম কিস্তির ৩০ লক্ষের অর্ধেক টাকা খরচের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট (ইউসি) বা কাজ শেষের শংসাপত্র পেলে পরের কিস্তির ৩০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়। রাস্তা, সেতু, পানীয় জল প্রভৃতি খাতে এই তহবিলের টাকা খরচ করা যায়। প্রশাসন সূত্রে খবর, আর কোনও বকেয়া থাকল না। প্রত্যেক বিধায়কের তহবিলেই শেষ পাঁচটি অর্থবর্ষের বরাদ্দ চলে এসেছে।
করোনা-কালে মাস তিনেক বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ বন্ধ ছিল। রাজ্য থেকেই টাকা খরচ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। ফলে, প্রস্তাবিত উন্নয়নমূলক কাজগুলি থমকে ছিল। অনেকের ধারণা, করোনা মোকাবিলায় যে বিপুল আর্থিক খরচ হচ্ছে রাজ্য সরকারের, সে কথা চিন্তা করেই ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরে অবশ্য ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। পরবর্তী নির্দেশে জেলাকে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিধায়ক তহবিলের টাকা খরচ করা যাবে। এরপরই পড়ে থাকা টাকা খরচের তোড়জোড় শুরু হয়।
এলাকার উন্নয়ন অনেকটা নির্ভর করে এই তহবিলের উপরে। বরাদ্দ টাকায় ছোট-বড় অনেক প্রকল্পই হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১৬-’১৭ থেকে ২০১৯-’২০, এই চার বছরে জেলার ১৫ জন বিধায়কের কাছ থেকে ১,১২৬টি প্রকল্পের সুপারিশ এসেছিল। প্রকল্পগুলি রূপায়ণে খরচ হওয়ার কথা ৩৬ কোটি ২০ লক্ষ ১১ হাজার ৯৫৯ টাকা। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তহবিলে ৩৬ কোটি টাকা এসেছিল। তখন পর্যন্ত ৯৭৯টি প্রকল্প মঞ্জুর করা হয়েছে। প্রকল্পগুলি রূপায়ণে খরচ হওয়ার কথা ৩০ কোটি ৭৪ লক্ষ ৬০ হাজার ৯৯৩ টাকা।
বকেয়া আসায় খুশি বিধায়কেরাও। খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দীনেন রায়, নারায়ণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষ প্রমুখ বলেন, ‘‘বেশ কিছু উন্নয়ন কাজের সুপারিশ করেছি। ওই কাজগুলি হলে এলাকারই উন্নয়ন হবে।’’ এক সময়ে বিধানসভায় বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিও ওঠে। তৃণমূল বিধায়কদের অবশ্য বক্তব্য, এর খুব প্রয়োজন নেই। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্যে যা উন্নয়ন হচ্ছে, তারপর ওই তহবিলের বরাদ্দ বাড়ানোর দরকার পড়ে না।