বাসের খোঁজে হন্যে

মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চিত্রটা ছিল এরকম মিশ্রই। তবে এ বারও ধর্মঘটে যন্ত্রণা থেকে রেহাই মেলেনি জেলাবাসীর।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৩
Share:

বেসরকারি বাস রাস্তায় নামেনি। সরকারি বাসের অপেক্ষায় যাত্রীরা। মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে মঙ্গলবার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

কোথাও রেল-রাস্তা অবরোধ, সরকারি অফিসের সামনে পিকেটিং। কোথাও দোকান-বাজার অন্য দিনের মতোই কর্মচঞ্চল। বামেদের ডাকা দেশব্যাপী ধর্মঘটের প্রথমদিন, মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চিত্রটা ছিল এরকম মিশ্রই। তবে এ বারও ধর্মঘটে যন্ত্রণা থেকে রেহাই মেলেনি জেলাবাসীর।

Advertisement

গড়বেতার মিঠু মণ্ডল দুই বাচ্চাকে নিয়ে ডেবরায় বাপের বাড়ি যাচ্ছিলেন অসুস্থ মাকে দেখতে। মেদিনীপুর থেকে ডেবরা যাওয়ার বাস না পেয়ে ফিরে যান তিনি। মিঠু বলেন, ‘‘বাস না থাকায় মাঝপথ থেকেই ঘুরে আসতে বাধ্য হলাম দুই বাচ্চাকে নিয়ে।’’ জেলায় বেশি প্রভাব পড়েছে বেসরকারি বাস চলাচলে। জেলার উপর দিয়ে রোজ ৮০০ বাস চলাচল করে। এ দিন প্রায় ৩০ শতাংশ বাস রাস্তাতেই নামেনি বলে খবর। জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, ‘‘সকালের দিকে বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ ছিল, তাই কিছু বাস নামতে পারেনি। তবে বুধবার এই পরিস্থিতি হবে না।’’ সরকারি বাস পথে নামলেও সংখ্যাটা ছিল খুবই কম।

এদিন মেদিনীপুর শহরে কেরানিতলার সামনের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করেন ধর্মঘট সমর্থনকারীরা। কালেক্টরেটের সামনে ধর্মঘটের সমর্থনে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায় এসইউসি, সিপিএমের শ্রমিক সংগঠনের কর্মীরা। শালবনির ভাদুতলায় সকালে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা হয়। বেলদাতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ হয়। ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনা, ক্ষীরপাই এলাকায় রাস্তায় যানবাহন আটকানোর চেষ্টা হয়। খড়্গপুর মহকুমার বিভিন্ন রাস্তায় অবরোধ করার চেষ্টা করেন বাম কর্মী সমর্থকেরা। প্রেমবাজারে পথ অবরোধ করেন সিটু ও আইটাকের কর্মীরা। অবরোধ হয় সবংয়ের তেমাথানিতেও।

Advertisement

ধর্মঘট সমর্থকদের হাত থেকে রেহাই পায়নি ট্রেনও। এদিন সকালেই হিজলি স্টেশনে আইটাক সমর্থকেরা বিপ্লব ভট্টের নেতৃত্বে রেল অবরোধের করা হয়। আটকে পড়ে আনন্দবিহার-পুরী নন্দনকানন এক্সপ্রেস। প্রায় আড়াই ঘন্টা পর অবরোধ মুক্ত হয় আরপিএফের সহায়তায়। অবরোধ করা হয় বালিচক, বেলদা, নেকুড়সেনি স্টেশনে। আটকে পড়ে কয়েকটি লোকাল ট্রেন। খড়্গপুরের খরিদা রেলগেটে সিপিএম নেতা অনিল দাসের নেতৃত্বে অবরোধ করা হয়।

ধর্মঘটে অবশ্য স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে জেলা কালেক্টরেট, জেলাপরিষদ সহ জেলার সব সরকারি অফিসগুলিতে। ঘাটাল, মেদিনীপুর ও খড়্গপুর মহকুমার অধিকাংশ দোকান - বাজার এ দিন অন্য দিনের মতোই ছিল কর্মচঞ্চল। তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের জেলা সম্পাদক অনুপ মান্নার দাবি, ‘‘ধর্মঘটের কোনও প্রভাব পড়েনি। সরকারি অফিসগুলোয় হাজিরা ছিল স্বাভাবিক।’’ যদিও সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, ‘‘এদিন মানুষই ধর্মঘট সফল করেছেন।’’

গোলমালের অভিযোগে এদিন মেদিনীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় এসএফআই -র জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ মুদি, যুব নেতা মানস প্রামাণিককে। ঘাটালে আটক করা

হয় সিপিএম নেতা অশোক সাঁতরা, উত্তম মণ্ডল সহ ২০ জন বাম নেতাকর্মীকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement