শুরু হয়েছে গর্ত খোঁড়া। দাসপুরে।—নিজস্ব চিত্র
ভিন্ রাজ্যগুলি থেকে প্রচুর পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন। তাঁদের কাজ দিতে হবে। সবদিক দেখে একশো দিনের প্রকল্পে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সবুজায়নের পরিকল্পনা করছে। এ জন্য গর্ত খোঁড়া সপ্তাহ পালন হচ্ছে জেলায়। প্রশাসনের দাবি, এমন পরিকল্পনা এখানে এই প্রথম। এতে শ্রমদিবস অনেক বাড়বে বলে আশাবাদী প্রশাসন।
জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘একশো দিনের প্রকল্পে গর্ত খোঁড়া হচ্ছে। ওখানে গাছ লাগানো হবে। সবুজায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’ একশো দিনের কাজ প্রকল্পের জেলা আধিকারিক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সব ব্লকেই যাতে কাজটি ভালভাবে হয় তা দেখা হচ্ছে।’’ প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, কয়েক দিন আগেই ব্লকগুলির সঙ্গে জেলার এক ভিডিয়ো বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এর আগে বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্বজিৎ। ওই সূত্রে খবর, ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্প যেখানে হবে সেখানে গর্ত খোঁড়া হচ্ছে। পাশাপাশি, বনসৃজনের মতো প্রকল্প যেখানে হবে, সেখানেও গর্ত খোঁড়া হচ্ছে। কাজে নজরদারি চালানোর জন্য ব্লকপিছু এক- দু’জন করে নোডাল অফিসারও নিয়োগ করা হয়েছে। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটদেরই নোডাল অফিসার করা হয়েছে।
সোমবার থেকে শুরু হয়েছে গর্ত খোঁড়া সপ্তাহ পালন। চলবে আগামী রবিবার পর্যন্ত। কোন ক্ষেত্রে কত ফুট গভীর পর্যন্ত গর্ত খুঁড়তে হবে, এক নির্দেশিকায় তা-ও নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ফল- ফুলের গাছের ক্ষেত্রে (উদ্যানপালন) গর্তের গভীরতা তিন ফুট থাকবে। অন্য গাছের ক্ষেত্রে (বনজ) গর্তের গভীরতা আড়াই ফুট থাকবে। এই সময়ের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ৬২ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এসেছেন। এঁদের অনেকেই কাজ চেয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করছেন। সমস্যার আশু সমাধানেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এমন সপ্তাহ পালনের পরিকল্পনা। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, বর্ষার আগেই লক্ষাধিক নতুন চারা লাগানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
একশো দিনের কাজে এখন রাজ্যের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরেই প্রথম স্থানে রয়েছে। অনেকে মনে করছেন, মাটি খোঁড়া সপ্তাহ সব ব্লকে ঠিকঠাকভাবে পালন করা গেলে ওই স্থান ধরে রাখতে জেলার সুবিধে হবে। কারণ, বেশিরভাগ ব্লকে ভাল কাজ হলে শ্রমদিবস বাড়বে। পরিবারপিছু গড় কর্মদিবস বাড়বে। পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের সুযোগ দিতে একশো দিনের কাজকে বেশি করে কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দ্রুত কার্যকরের পরামর্শ দেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এরপরই ভিন্ রাজ্য থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজ দিতে নানা পরিকল্পনা করে জেলা প্রশাসন। এই সপ্তাহ পালনের পরিকল্পনা তারই একটি।