একে তীব্র গরমে টেকা দায়। তার উপর মাঝেমধ্যেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে। রয়েছে লো-ভোল্টেজের সমস্যাও। সব মিলিয়ে অসন্তোষের পারদ যে ছড়াচ্ছে, তার আঁচ পেলেন মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী বিধায়ক মৃগেন মাইতি।
শনিবার রাতে মেদিনীপুরের সিপাইবাজারে মৃগেনবাবুর বাড়িতে চড়াও হন দলের কিছু কর্মী-সমর্থক। প্রশ্ন করেন, ‘কেন শহরে বিদ্যুতের এই হাল!’’ এই ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন মৃগেনবাবু। তিনি মানছেন, “কয়েকজন বাড়িতে এসেছিলেন। বিদ্যুতের সমস্যার কথা জানিয়েছেন।’’
রোজকার মতো শনিবার রাতেও ফেডারেশন হল থেকে বাড়িতে ফেরেন মৃগেনবাবু। তারপর এলাকারই একাংশ তৃণমূল কর্মী-সমর্থক তাঁর বাড়িতে এসে বিদ্যুৎ নিয়ে ক্ষোভের কথা জানান। পরিস্থিতি না বদলালে বিদ্যুৎ দফতরে গিয়ে বিক্ষোভ করার হুঁশিয়ারিও দেন তাঁরা। পরিস্থিতি দেখে বিদায়ী বিধায়ক মৃগেনবাবু তাঁদের আশ্বস্ত করেন। বলেন, ‘‘শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’’ একই সঙ্গে মৃগেনবাবু মানেন, ‘‘যা গরম এখন বিদ্যুৎ না থাকলে তো বাড়িতে থাকাই মুশকিল। কেন এত ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট হবে!’’
মেদিনীপুর শহরে বিদ্যুতের সমস্যা এই প্রথম নয়, আগেও হয়েছে। তবে তার কারণ জানতে চেয়ে দলেরই একাংশ কর্মী-সমর্থকের বিদায়ী বিধায়কের বাড়িতে চড়াও হওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। তৃণমূলের এক কর্মীর ব্যাখ্যা, ‘‘ওঁরা দলের কর্মী- সমর্থক ঠিকই, তবে এলাকারও তো বাসিন্দা। এলাকার বাসিন্দা হিসেবেই কয়েকজন মৃগেনবাবুর কাছে এসেছিলেন।’’ কর্মী- সমর্থকেরা কি বিদ্যুৎ দফতরে গিয়ে বিক্ষোভ করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন? বিদায়ী বিধায়ক বলেন, “ওঁদের সব কথাই শুনেছি। দেখি কী হয়!’’
বেশ কয়েক দিন ধরেই বিদ্যুৎ না থাকায় নাজেহাল মেদিনীপুরবাসী। প্রায় দিনই সকাল ৭টা-সাড়ে ৭টা হলেই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। ফের সংযোগ ফিরছে সকাল ৯টা-সাড়ে ৯টা নাগাদ। বিদ্যুৎ দফতরের বক্তব্য, মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে নতুন একটি সাব-স্টেশন তৈরি হচ্ছে। লাইনের কাজ চলছে বলেই ‘শাট ডাউন’ করতে হচ্ছে। জেলার বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতিও বলেন, “জেলার কোথাও বিদ্যুতের কোনও সমস্যা নেই! মেদিনীপুর শহরে নতুন সাব- স্টেশনের কাজ চলছে। তাই কিছুক্ষণ বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ থাকছে।” ১৫ থেকে ৩০ এপ্রিল এই পরিস্থিতি থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
যদিও শহরবাসীর বক্তব্য, শুধু সকালে ঘণ্টা দুয়েক নয়, কখনও দুপুরে, কখনও সন্ধ্যায়, আবার কখনও রাতেও বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বজ্রপাত-সহ ঝড় বৃষ্টি হলে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের তত্ত্ব দিচ্ছে বিদ্যুৎ দফতর। শহরে অবশ্য দু’-এক দিনের মধ্যে বজ্রপাতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। ফলে, বিদ্যুৎ না থাকা নিয়ে শহরবাসীর ক্ষোভ বাড়ছে বই কমছে না।