—প্রতীকী চিত্র।
শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বল্লুক সমবায় ঋণ দান সমিতির নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল ও বিরোধীদের সংঘর্ষে ছড়াল উত্তেজনা। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কয়েকজন জখম হয়েছেন।
রবিবার ওই সমবায়ের নির্বাচনে জয়লাভ করে তৃণমূল। এ দিন ভোটগ্রহণের সময়, ভোটের ফল প্রকাশের পরে তৃণমূল ও বিরোধী আইএসএফের সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১৩ জন আহত হয়েছেন বলে খবর।
তাঁদের জানুবসান গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বল্লুক-১ এবং বল্লুক-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সমস্ত গ্রাম নিয়ে গঠিত ওই সমবায় সমিতি। ওই সমবায় সমিতির নির্বাচনে মোট ৪৪টি আসনের মধ্যে ছ’টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থীরা। রবিবার ৩৮টি আসনে ভোট গ্রহণ করা হয়। ৩৮টি আসনেই তৃণমূলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ছিল বিরোধীরা।
অভিযোগ— বিজেপি, সিপিএম, আইএসএফ জোট বেঁধে প্রার্থী দিয়েছিল। এ ছাড়াও এসইউসিও প্রার্থী দিয়ে লড়াই করে। স্থানীয় চাঠরা কুঞ্জরাণী বাণীভবন হাই স্কুলে কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দুপুর নাগাদ ভোট গ্রহণ চলার সময়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে গোলমাল বাঁধে বলে অভিযোগ। এতে উভয়পক্ষের একজন করে আহত হন। পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দেয়।
এরপর ভোট গণনায় তৃণমূল ৩৪টি, বিজেপি দু’টি, সিপিএম দু’টি আসনে জয়লাভ করে।
অর্থাৎ মোট ৪৪টি আসনের মধ্যে ৪০টি আসনে তৃণমূল জয়লাভ করে ওই সমবায়ে এ বার ফের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।
অপর দিকে বিজেপি-সহ বিরোধীরা মোট চারটি আসন পেয়েছে। এ দিকে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর তৃণমূলের কর্মীরা বিজয় মিছিল করে রানীচক গ্রামে যাওয়ার সময়েই ফের আইএসএফ সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে বলে অভিযোগ। এতে আইএসএফের সাতজন এবং তৃণমূলের ছ’জন আহত হয়েছেনবলে অভিযোগ।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েকমাস আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বল্লুক-১ গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে। বল্লুক-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল ক্ষমতা দখল করলেও এখানে বিরোধীরাও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলকে হারিয়ে বিজেপি ক্ষমতা দখল করেছে।
ফলে বল্লুক-১ ও বল্লুক-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে থাকা বল্লুক সমবায় সমিতির নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল ও বিজেপি-সহ বিরোধীদের লড়াই জমে উঠেছিল। তবে গতবার ওই সমবায় সমিতিতে ক্ষমতাসীন তৃণমূল এ বার নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়ন পর্বের ৪৪টি আসনের মধ্যে ছ’টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে এক-কদম এগিয়ে যায়।
এ দিন বাকি ৩৮টি আসনের ভোটগ্রহণের পর ফলাফলে তৃণমূল ৩৪টি আসনে জয়লাভ করে এবং বিরোধী সিপিএম, বিজেপি মিলিয়ে চারটি আসনে জয়লাভ করে। এ দিন সমবায় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ এবং ফলাফল প্রকাশের পরে তৃণমূল ও আইএসএফ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে দু’পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধেঅভিযোগ তুলেছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় আইএসএফ নেতা শেখ রবিউলের অভিযোগ, ‘‘গত পঞ্চায়েতের ভোটে রাণীচক গ্রামে তৃণমূল হেরে গিয়েছিল। এ দিন এই গ্রামে জেতার পরেই তৃণমূল বহিরাগত লোকজনদের নিয়ে মিছিল করে এসে আমাদের সমর্থকদের উপরআক্রমণ করেছে।’’
যদিও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব জানা বলেন, ‘‘সমবায়ের ভোটে বিজেপি, সিপিএম ও আইএসএফ জোট বেঁধে লড়াই করেছিল। আজকে ভোট চলাকালীন আমাদের একজন প্রার্থীকে আক্রমণ করেছিল আইএসএফের লোকজন। ভোটের ফল প্রকাশের পরে আমাদের কর্মী-সমর্থক রাণীচক গ্রামে ফিরে গেলে আইএসএফ কর্মী-সমর্থকরা আমাদের কর্মীদের উপর আক্রমণ করে ও বাড়িতে ভাঙচুর করেছে।’’