ট্রেকার, বাস বোঝাই করে যাচ্ছেন তৃণমুল সমর্থকরা। — নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটে রাজ্যে তৃণমূলের বিপুল জয় হলেও পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ও কাঁথি আসনে হার হয়েছে। জয়লাভ করেছে বিজেপি। জেলায় দলের মধ্যে অন্তর্ঘাত ও গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজ্য নেতৃত্ব। এমন পরিস্থিতিতে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা থেকে বেশি সংখ্যক কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গিয়ে সাংগঠনিক শক্তি ও একতার বার্তা দেওয়ার ব্যাপারে জোর দিয়েছিলেন দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। লোক নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সফলও হয়েছেন অনেকটা। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কর্মী-সমর্থককে সমাবেশে নিয়ে যেতে বাস, ছোট যাত্রীবাহী গাড়ি ভাড়া নেওয়া ছাড়াও ট্রেনে করে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মেচেদা, পাঁশকুড়া স্টেশন ও কোলাঘাটে রূপনারায়ণ সেতুর কাছেই জাতীয় সড়কের ধারে জল, বিস্কুট বিতরণ করা হয়েছিল। নন্দীগ্রাম, খেজুরি, চণ্ডীপুর, ভগবানপুর, এগরা ও হলদিয়া, মহিষাদল, তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী, ময়না, নন্দকুমার এলাকা থেকে বহু কর্মী-সমর্থক বাসে চেপে সমাবেশে গিয়েছিলেন। ময়না, নন্দকুমার থেকে ট্রেকার-সহ বিভিন্ন গাড়িতে চেপে সমর্থকেরা গিয়েছেন। হলদিয়া, মেচেদা, ভোগপুর, পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট রেল স্টেশন লাগোয়া এলাকার অনেক কর্মী-সমর্থক ট্রেনে চেপে সমাবেশে গিয়েছিলেন। তমলুকের পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়, তমলুক শহর তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া-সহ জেলার বেশকিছু তৃণমূল নেতা দলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বাসে চেপে সমাবেশে যাওয়ার ছবি সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন।
দল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে তমলুক সাংগঠনিক জেলা থেকে ৫০ হাজার ও কাঁথি সাংগঠনিক জেলা থেকে ৫০ হাজার কর্মী-সমর্থক নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল। ভিড় ভালই হয়েছিল। তমলুক সাংগঠনিক জেলা থেকে ৩০০ টি বাস, ট্রেকার সহ ৬০০টি ছোটগাড়ি ছাড়াও অনেকে ট্রেনে চেপে গিয়েছিলেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লক থেকে এ দিন মোট ২ টি বাস ও ৬ টি ছোট গাড়িতে করে প্রায় আড়াই হাজার কর্মী-সমর্থক গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা তথা জেলাপরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সামসুল ইসলাম। তৃণমূলের তমলুক শহর সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া বলেন, ‘‘তমলুক শহর থেকে ৩ টি বাস ও ৬ টি ছোট গাড়ি মিলিয়ে প্রায় ২৫০০ কর্মী-সমর্থক গিয়েছিলেন। গতবারের চেয়ে এ বার দু’টি বাস বেশি গিয়েছিল।’’
শুভেন্দুর খাসতালুক কাঁথি থেকে যুব তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুপ্রকাশ গিরির আয়োজনে কর্মী-সমর্থকেরা শনিবার রাতেই সমাবেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান। যুব তৃণমূলের তরফে খেজুরি, উত্তর কাঁথি এবং ভগবানপুর সহ সব এলাকা মিলিয়ে সাতটি বাস গিয়েছিল। কাঁথি সাংগঠনিক জেলার ১২ টি ব্লক থেকে মোট ২৮৫ টি বাসে চেপে কর্মী-সমর্থকেরা গিয়েছিলেন। এ দিন জেলাপরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক ও কারা মন্ত্রী অখিল গিরি শিবির থেকে পৃথকভাবে কর্মীরা সমাবেশে যান। রামনগর বিধানসভা এলাকা থেকে অখিলের উদ্যোগে ২০ টি বাসে চেপে কর্মী-সমর্থক সমাবেশে গিয়েছেন। তৃণমূলের জেলা (কাঁথি) সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা দাবি করেন, ‘‘কর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল আগের তুলনায় বেশি।’’