প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের শাসকদলের বিধায়কদের পাঠানো হয়েছে রেল মন্ত্রকের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র। সেই আমন্ত্রণ বিধায়কদের দফতরের তরফে ‘গ্রহণ’ও করা হয়েছে। কিন্তু অনুষ্ঠানের আগের দিন জেলার একাধিক বিধায়কের দাবি, তাঁরা পাননি আমন্ত্রণপত্র। ফলে কেন্দ্রের ‘অমৃত ভারত স্টেশন’ প্রকল্পে জেলার যে ক’টি স্টেশনের কাজের ভার্চুয়ালি শিলান্যাস আজ, সোমবার করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তাতে হয়তো দেখা যাবে না তৃণমূলের একাধিক বিধায়ককে। তবে বাদের তালিকায় থাকছেন না তৃণমূলের দুই সাংসদ শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দু অধিকারী। তাঁরা ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ায় ইতিবাচক মত জানিয়েছেন।
‘অমৃত ভারত স্টেশন’ প্রকল্পে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, মেচেদা, পাঁশকুড়া, হলদিয়া ও দিঘা স্টেশনের উন্নয়ন করা হবে। সেই সব স্টেশনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে রেলের তরফে দল নির্বিশেষে স্থানীয় সাংসদ, বিধায়ক, জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে এই আমন্ত্রণ ঘিরে বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে।
পাঁশকুড়া পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীর দাবি, রেল দফতরের তরফে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ করা হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘রেলের তরফে এক ব্যক্তি আমার ভাইকে শুধু ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন, ওই অনুষ্ঠানে আমি থাকতে পারব কি না। আনুষ্ঠানিক ভাবে আমন্ত্রণ না পাওয়ায় যাওয়ার প্রশ্ন নেই।’’ একইভাবে পাঁশকুড়া পশ্চিমের বিধায়ক ফিরোজা বিবি বলছেন, ‘‘রেলের তরফে আমাকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’’ এ ব্যাপারে তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘স্থানীয় বিধায়কদের আমন্ত্রণ করা নিয়েও রেল দফতর পক্ষপাতিত্ব করছে। আমাদের সব বিধায়কদের আমন্ত্রণ করা হয়নি। কোথাও বা তা নাম কা ওয়াস্তে করছে। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।’’
রেলের তরফে অবশ্য দাবি করা হচ্ছে, মৎস্যমন্ত্রী এবং ফিরোজা বিবিকে লিখিত আকারেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেই আমন্ত্রণপত্রের প্রতিলিপি বিধায়কের দফতরের তরফে গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তাদের দাবি। এ ব্যাপারে খড়্গপুরের ডিআরএম কে আর চৌধুরী এক দিন আগেই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জানিয়েছেন, তাঁদের তরফে নিয়ম মেনে সব আমন্ত্রণ করা হয়েছে। আমন্ত্রণে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ প্রসঙ্গে হলদিয়ার বিধায়ক তথা বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তাপসী মণ্ডল বলেন, ‘‘সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে বিজেপি কোনও রাজনৈতিক রং ছাড়া সমস্ত জনপ্রতিনিধিদের গুরুত্ব দেয়। রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
জেলার বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র অবশ্য তমলুক স্টেশনে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি ওইদিন কলকাতায় যাওয়ার কারণে অনুষ্ঠানে থাকতে পারবেন না। অন্যদিকে, জেলায় রয়েছেন তৃণমূলের দুই সাংসদ। কাঁথির শিশির অধিকারী এবং তমলুকের দিব্যেন্দু অধিকারী। গত কয়েক বছর ধরে এই দুই তৃণমূল নেতা বিজেপি ঘেঁষা হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে দলের তরফে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের রেল দফতরের অনুষ্ঠানে তাঁরা কি থাকবেন? দিব্যেন্দু জানিয়েছেন, তিনি মেচেদা স্টেশনের অনুষ্ঠানে থাকবেন। আর শিশিরবাবু বলছেন, ‘‘আমন্ত্রণ পেয়েছি। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল কর্মসূচিতে যেতে পারি।’’