বুধবার সাংসদ কার্যালয়ে দিলীপ। নিজস্ব চিত্র
বাণীবন্দনার দিনেও লাগল রাজনীতির রং।
বুধবার সরস্বতী পুজোর দিনেই রেলশহরে নিজের সাংসদ কার্যালয়ে এসে খড়্গপুর পুরবোর্ড দখল করবেন বলে দাবি করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। বলেন, ‘‘রাজ্যের সব কটি পুরসভায় লড়াই দেব। এবার সবচেয়ে বেশি ভাল ফল আমাদের হবে।” এদিনই কেশিয়াড়িতে কয়েকটি স্কুলে যান তিনি। সেখানে কয়েকটি জায়গায় অভ্যর্থনা পেলেও একটি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, সাংসদ বিনা নিমন্ত্রণেই এসেছেন।
বুধবার সকালে প্রথমে খড়্গপুরে আসেন দিলীপ। সেখানে তাঁর সাংসদ কার্যালয়ে সরস্বতী পুজোর আয়োজন ছিল। সেখানেই শিক্ষকদের নানা সুবিধা দিয়ে রাজ্য সরকার ভোটের রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দাবি করেন, “আগামী নির্বাচনকে মাথায় রেখেই তৃণমূল সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এতদিন যাঁরা ক্ষুব্ধ ছিলেন, যাঁদের স্বার্থের কথা সরকার ভাবেনি, সেই শিক্ষকদের এখন খুশি করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ অনেক স্কুলে সরস্বতী পুজো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
খড়্গপুর থেকে এদিন বিকেলে কেশিয়াড়ি যান তিনি। দিলীপ যখন বাঘাস্তি ইউনিয়ন হরিচরণ এসসি হাইস্কুলে ঢোকেন তখন সেখানে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের উপস্থিতি অনেক কম ছিল। ওই স্কুলের বারান্দায় মিনিট কয়েক বসেই ফিরে যান সাংসদ। পরে ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনুধ্বজ রানা বলে দেন, ‘‘সকাল সাড়ে দশটায় বিজেপি থেকে একজন এসে সাংসদের আসার কথা জানান। কিন্তু স্কুল থেকে সাংসদকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তাই তিনি যখন স্কুলে আসেন তখন তেমন কেউ ছিলেন না। তাই অভ্যর্থনাও জানানো যায়নি।’’ তবে বিজেপির স্থানীয় কর্মী-সমর্থকেরা অবশ্য দিলীপকে অর্ভ্যথনা জানান। গত ২০ জানুয়ারি বিজেপি পরিচালিত বাঘাস্তি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান-সহ চারজন তৃণমূলে যোগ দেন। ওই পঞ্চায়েতে এখন তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারপরেই দিলীপের বাঘাস্তি স্কুলে যাওয়াকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না তৃণমূল। দলের কেশিয়াড়ি ব্লক সভাপতি অশোক রাউতের দাবি, ‘‘দিলীপবাবু হয়তো ভেবেছেন আগামী দিনে আর কেশিয়াড়ি আসতে পারবেন না। তাই ঘুরে গেলেন। কারণ এখানে বিজেপির লোকজনই বিজেপির প্রতি বিরক্ত।’’
এদিন কেশিয়াড়ির জয়কৃষ্ণপুর নেহেরু বিদ্যাভবন ও ফান্দাড় গদাধর বিদ্যাপীঠে অবশ্য দিলীপকে সংবর্ধনা জানানো হয়। ফান্দাড় হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শিশিরকুমার দে বলেন, ‘‘সাংসদ নিজে থেকেই স্কুলে এসেছেন এটা বিরল ঘটনা। উনি উদাহরণ তৈরি করলেন। এর আগে আমরা অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ করেছি। কেউ এসেছেন কেউ আসেননি।’’ ফান্দাড় হাইস্কুলে বক্তব্যও রাখেন সাংসদ।