ভাসছে প্রতিমার কাঠামো। তমলুকের কপালমোচন পুকুরে। নিজস্ব চিত্র
পুরসভা ও প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে প্রতিমা বিসর্জন হল নির্বিঘ্নেই। কিন্তু দূষণ বিধি উপেক্ষা করে পুকুর, জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জনে অভিযুক্ত একাধিক পুজো কমিটি।
প্রতিমা বিসর্জনের জেরে জলাশয় বা পুকুরের জলদূষণ রুখতে পুরসভা ও প্রশাসনের তরফে নির্দিষ্ট নদী বা খালের ঘাটে দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুক শহরে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য রূপনারায়ণ নদের সাথে যুক্ত শঙ্করআড়া খালের ষোলোফুকার গেট ঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হয়। বুধবার বিজয়া দশমীর দিন ও আজ শুক্রবার, এই দু’দিন শহরের পুজোগুলির প্রতিমা বিসর্জনের দিন নির্দিষ্ট করেছে প্রশাসন-পুর কর্তৃপক্ষ।প্রতিমা বিসর্জনে সাহায্য করতে ঘাটের কাছে পুরসভার তরফে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ও ক্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রয়েছে পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বুধবার বিজয়া দশমীর দিন শহরের ১৭টি পুজো কমিটি প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ওই ঘাটে প্রতিমা নিয়ে গিয়েছিল। সন্ধ্যে থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিমা বিসর্জন হয় ও বিসর্জনের পরে প্রতিমার কাঠামো জল থেকে তুলে ফেলা হয়। কিন্তু প্রশাসন ও পুরসভার নিষেধ উপেক্ষা করে তমলুক রাজবাড়ির খাটপুকুরের ঘাট, জেলখানা মোড়ের কাছে পুকুরঘাট, শঙ্করআড়া এলাকায় কপালমোচন ঘাট, ধারিন্দা শিবমন্দির সংলগ্ন পুকুরঘাট, আবাসবাড়ি এলাকায় পায়রাটুঙ্গি খালে দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
এভাবে প্রতিমা বিসর্জনের জেরে ওই সমস্ত জলাশয়ে প্রতিমার কাঠামো সহ অন্যান্য সামগ্রী ও রং মেশায় জলদূষণের আশঙ্কা করছেন এলাকার বাসিন্দারা। পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শহরে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ৫৫টি দুর্গাপুজো হয়।এছাড়াও পারিবারিক ও সর্বজনীন দুর্গাপুজো হয়। কিন্তু এই সব পুজোর প্রতিমার বিসর্জনের জেরে বানপুকুর, রামসাগর, বৈকুণ্ঠ সরোবরের মতো বড় জলাশয় বা পুকুরে জল দূষণ করার অভিযোগ উঠেছিল। ওই সব জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ করতে শহরের ষোলোফুকার গেটের কাছে শঙ্করআড়া খালে শহরের সমস্ত দুর্গাপুজোর প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হয়। গত কয়েক বছর ধরেই পুলিশ, প্রশাসন এবং তমলুক পুরসভার তত্ত্বাবধানে শঙ্করআড়া খালে প্রতিমা বিসর্জন হয়ে আসছে। চলতি বছরেও পুরসভা, পুলিশ-প্রশাসনের তরফে শঙ্করআড়া খালে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য পুজো কমিটিগুলিকে আগাম জানানো হয়েছিল। শহরের অধিকাংশ পুজো কমিটি নিয়ম মেনে ওই নির্দিষ্ট ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দিলেও কিছু পুজো কমিটি সেই নিয়ম ভেঙে বিভিন্ন পুকুর, জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছে।
তমলুকের পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, ‘‘জলাশয় বা পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ করতে ষোলোফুকার গেটের কাছে শঙ্করআড়া খালে প্রতিমা বিসর্জন দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ পুজোকমিটি নিয়ম মেনে ওই ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেয়। তবে কয়েকটি পুজোকমিটির নিয়ম না মেনে জলাশয়ে এবং পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে। ওই সব পুজোকমিটিগুলিকে চিহ্নিত করে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’