সবংয়ের বিধায়ক তথা মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।
মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক’দিন আগেই জেলায় এসে তাঁকে শুনিয়েছেন, ‘‘মানসদা, শুধু সবং করলে চলবে? জেলাটা তো আপনার। আপনি বাংলার মন্ত্রী।’’
এরপরই পশ্চিম মেদিনীপুরে দলে ফের ‘সক্রিয়’ সবংয়ের বিধায়ক তথা মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের পরে দলীয় সংগঠনের ‘ফাঁকফোঁকর’ পূরণে তৎপর দলের জেলা নেতৃত্ব। এ ক্ষেত্রে পুরোভাগে দেখা যাচ্ছে মানসকে। সঙ্গে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি।
বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে তৃণমূলের বৈঠক হয়েছে কেশিয়াড়ি, মোহনপুর, শালবনি, চন্দ্রকোনা রোড প্রভৃতি এলাকায় দলের ‘ক্ষত’ সারাতে। নেতৃত্বে ছিলেন মানসই। কাল, রবিবার ঘাটালে একই ধাঁচে এক বৈঠক হবে। ঘাটাল, দাসপুর-১ এবং ২, চন্দ্রকোনা-১ এবং ২ ব্লকের সমস্যা সমাধানে।তারপর আগামী মঙ্গলবার ডেবরায় বৈঠক হবে ডেবরা, কেশপুর নিয়ে। দুই বৈঠকেই নেতৃত্বে থাকার কথা মানসের।
পঞ্চায়েত ভোট আসন্ন। বছর ঘুরলে লোকসভা ভোট। জেলায় তৃণমূলে কি তবে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত— জল্পনা দলের মধ্যেই। ‘ডাক্তার’ মানস অবশ্য শোনাচ্ছেন, ‘‘আমরা হচ্ছি পিওন। আমাদের কাজ, আমাদের কর্মী এবং সাধারণ মানুষের কাছে চিঠি পৌঁছে দেওয়া। মালিক সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর প্রধান সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ অজিত শোনাচ্ছেন, ‘‘শুধু আমরা নই। জেলার বিধায়কেরা আছেন। পদাধিকারীরা আছেন। সবাই-ই আছেন।’’
দলের জনসংযোগ যাত্রা নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছিলেন অভিষেক। শালবনি এবং সবং, দুই এলাকায় দুই সাংগঠনিক জেলার (মেদিনীপুর এবং ঘাটাল) অধিবেশন হয়েছে। শালবনির অধিবেশনে ছিলেন দলনেত্রী মমতাও। দলের এক সূত্রে খবর, জেলার বিভিন্ন এলাকায় যে ভাবে দলে ‘দ্বন্দ্ব’ মাথাচাড়া দিয়েছে, তাতে বেজায় ক্ষুব্ধ মমতা, অভিষেক দু’জনই। মমতা দাবি করেছেন, ‘‘তৃণমূল যদি ঝগড়া না করে, তাহলে তৃণমূলকে হটানোর ক্ষমতা কারও নেই।’’ মমতা, অভিষেক ফিরতেই ব্লক ধরে ধরে সাংগঠনিক ‘ক্ষত’ মেরামতের চেষ্টা শুরু হয়েছে। ব্লক ধরে ধরে সাংগঠনিক পর্যালোচনা। কেন? মানসের জবাব, ‘‘দায়িত্ব এবং সাংগঠনিক নির্দেশটা একেবারে উঁচু থেকে এসেছে।’’
মানসের দাবি, ‘‘বৈঠক সুষ্ঠুভাবেই হচ্ছে। কেশিয়াড়িতে একটা সমস্যা ছিল। মোটামুটি মিটেছে। মোহনপুরেও মিটে গিয়েছে। বিধায়ক বিক্রম প্রধানের সঙ্গে ব্লক সভাপতি মানিক মাইতির সহমত তৈরি হয়েছে। গড়বেতা-৩ ব্লকে সভাপতি আর অঞ্চল সভাপতিদের মধ্যে কিছু কমিউনিকেশন গ্যাপ ছিল। খুব সুন্দরভাবে মেটাতে পেরেছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যেখানে যেখানে ফাঁকফোকর রয়েছে আমরা সেগুলি মেটাব।’’ কিন্তু বৈঠকে সহমত হলেও বাইরে তো কোন্দল চলছে? তৃণমূলের রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের চেয়ারম্যান মানস বলছেন, বলছেন, ‘‘গণতান্ত্রিক দলে মতপার্থক্য থাকে। মতের বিভিন্নতা থাকে। এটা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য। সেটা যাতে সীমানা না ছাড়িয়ে যায়, সেটা দেখাই নেতাদের কর্তব্য।’’