লাঠির ঘায়ে ছেলের মৃত্যু, গ্রেফতার বাবা 

শুক্রবারের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, লোধা এই দিনমজুর পরিবারের সকলেই মদ্যপান করায় নিত্য অশান্তি লেগেই থাকত। শুক্রবার রাতেও বাইরে থেকে মদ্যপান করে এসে স্ত্রীর সঙ্গে বচসা শুরু করেন আনন্দ। শুরু হয় হাতাহাতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডেবরা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:৪০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

বাবার বিরুদ্ধে ছেলেকে খুনের অভিযোগ উঠল। শুক্রবার রাতে ডেবরার জলিবান্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাকুই গ্রামের ঘটনা। অভিযোগ, মদ্যপান করে এসে বাড়িতে স্ত্রীকে মারধর করছিল আনন্দ নায়েক। সেই সময় বাবা মানিক নায়েক মোটা লাঠি দিয়ে ছেলের মাথায় আঘাত করেন। কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় বছর উনত্রিশের আনন্দর।

Advertisement

ঘটনায় শ্বশুরের বিরুদ্ধে স্বামীকে খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের স্ত্রী বেহুলা নায়েক। তারপরেই মানিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার জেরে এলাকায় মদের ভাটির রমরমার অভিযোগে সরব এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ, ওই এলাকায় প্রায় পাঁচটি মদের ভাটি চলে। কখনও কখনও অভিযান হয়। তবে নিয়মিত অভিযানের অভাবে ফের মদের ভাটি ও ঠেক গজিয়ে ওঠে। এর ফলেই এলাকায় নেশাগ্রস্তের সংখ্যা বাড়ছে। আর তাকে কেন্দ্র করেই হচ্ছে অশান্তি।

এলাকার বাসিন্দা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য সুকেশ প্রামাণিকের অভিযোগ, “এলাকায় বেশ কয়েকটি মদ ভাটি ও মদের ঠেক রয়েছে। এর আগেও গ্রামবাসীদের অভিযোগ পেয়ে আবগারি দফতর অভিযান করেছে। সাময়িক বন্ধ থাকলেও ফের চলছে। নিয়মিত অভিযান প্রয়োজন।” আবগারি দফতরের জেলা সুপার একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “এটা ঠিক, কয়েক মাস ওই এলাকায় অভিযান হয়নি। তবে শীঘ্রই ওখানে অভিযান চালাব।’’

Advertisement

শুক্রবারের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, লোধা এই দিনমজুর পরিবারের সকলেই মদ্যপান করায় নিত্য অশান্তি লেগেই থাকত। শুক্রবার রাতেও বাইরে থেকে মদ্যপান করে এসে স্ত্রীর সঙ্গে বচসা শুরু করেন আনন্দ। শুরু হয় হাতাহাতি। ঘটনা দেখে এগিয়ে আসেন মানিক। অভিযোগ, তিনিও সেই সময় নেশাগ্রস্ত ছিলেন। ছেলে বৌমাকে মারছে দেখে প্রতিবাদ করেন তিনি। ছেলের সঙ্গে মারপিট বেধে যায় তাঁর। এরপরে একটি মোটা লাঠি দিয়ে মানিক ছেলের মাথায় আঘাত করেন বলে অভিযোগ। যে জমিতে এই লোধা পরিবারটি থাকে সেই জমির মালিক পড়শি ভোলানাথ মাইতির অভিযোগ, “ওঁরা সকলে সারাদিনই নেশা করে। রাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মারপিট হয়েছিল। সেই সময়ে মানিক নায়েক নিজের ছেলের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে। কিছুক্ষণ পরে ছেলের মৃত্যু হয়। সকালে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ওদের সকলকে থানায় নিয়ে গিয়েছে।”

পুলিশ সূত্রে দাবি, পুলিশের কাছে বেহুলা জানিয়েছেন, ওই দিন রাতে তার সঙ্গে স্বামীর অশান্তি হচ্ছিল। সেই সময় স্বামী তাকে মারধর করার প্রতিবাদ করেন শ্বশুর। এর পরেই শ্বশুরের সঙ্গে স্বামীর মারপিট শুরু হয়। তখন বাড়ি থেকে ছেলে নিয়ে বেরিয়ে যান বেহুলা। পরে ফিরে এসে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন আনন্দ। তার মাথায় আঘাত ও পিঠে কালশিটের দাগ ছিল। পরে কোয়াক চিকিৎসক এনে সতাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর। পড়শি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য সুকেশের দাবি, “শুনেছি রাতে বাবার হাতে ছেলে খুন হয়েছে। কোয়াক চিকিৎসক ডেকে বাঁচানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি। তাই ভোরে আনন্দ মারা যায়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement