আলিপুরে বুধবার হেলিকপ্টার অবতরণের মহড়া। নিজস্ব চিত্র
হয়েছে রাস্তা সংস্কার। সকালে মহড়া চলেছে হেলিকপ্টার অবতরণেরও। কিন্তু বেলা বাড়ার পরেই জেলা প্রশাসন এবং তৃণমূল সূত্রে সামনে এল, আগামী শুক্রবার এগরায় আপাতত আসছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এগরার খাদিকুলে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার মুখ্যমন্ত্রীর ওই কর্মসূচি কিছুদিন পিছিয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়ার কারণে মুখ্যমন্ত্রীর ওই কমসূচির দিনক্ষণ পরিবর্তন হচ্ছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।
আগামী শুক্রবার খাদিকুল গ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসার কথা শোনা গিয়েছিল। ১৬ মে ওই গ্রামেই বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। তাতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি, তাদের হাতে সরকারি ক্ষতিপূরণ তুলে দিতে পারেন বলে জানা গিয়েছিল। সেই মতো তাঁর সফরের প্রস্তুতি শুরু হয়ে হয়েছিল খাদিকুলে। বিস্ফোরণস্থল থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে আলিপুর গ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টারের জন্য হেলিপ্যাড বানানো হয়েছিল। এ দিন সকালে সেখানে হেলিকপ্টার অবতরণের মহড়া চলে। খাদিকুল গ্রামে যাওয়ার রাস্তা সংস্কার করা হয়।
এমন আবহে আগামী শনিবার পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছে। এর ফলে হেলিকপ্টার ওঠানামার ক্ষেত্রে ঝঞ্ঝাট হতে পারে বলে আশঙ্কা। অনুমান, সেই কারণেই চলতি সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রীর খাদিকুল গ্রামের সফর পিছিয়ে যাচ্ছে। এগরার স্থানীয় বিধায়ক তথা কাঁথি সংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তরুণ মাইতি বলেন, ‘‘বাজি বিস্ফোরণে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার জন্য একেবারেই আলাদা করে সময়সূচি নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তিনি এই সপ্তাহে আসবেন না। নানা ব্যস্ততার মাঝেও নতুন করে সময়সূচি তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রী খাদিকুল গ্রামে আসবেন।’’ এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, ‘‘চলতি সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী আসবেন কি না, সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত নবান্ন থেকে চূড়ান্তভাবে কিছু জানানো হয়নি।"
বিস্ফোরণের এত দিন পরেও মুখ্যমন্ত্রী এলাকায় না আসায় গত মঙ্গলবারই এগরার পথ সভা থেকে তাঁকে বিঁধেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এখন তাঁর সফরে যাওয়ার তোড়জোড়কে কটাক্ষ করে এ দিন উলুবেড়িয়ায় বিজেপির সভায় বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘ঘটনার ৮-৯ দিন পরে জামাইষষ্ঠী করতে যাচ্ছেন! এগরার মানুষ কাঁঠাল আর আম নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন!’’ বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মমতা মাইতিও বলছেন, ‘‘মৃতদের পারলৌকিক সব কাজকর্ম মিটে যাওয়ার পর হয়তো মুখ্যমন্ত্রী আসবেন!"
যেহেতু মুখ্যমন্ত্রীর আসার জন্য প্রশাসনিকভাবে সব রকমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গিয়েছে, সে ক্ষেত্রে আগামী সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী কি খাদিকুল গ্রামে যেতে পারেন— এখন সেই প্রশ্নও উঠছে। আগামী সপ্তাহে তৃণমূলের নব জোয়ার কর্মসূচিতে পূর্ব মেদিনীপুরে আসার কথা দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ফলে সে সময় কি একই সঙ্গে মমতা এবং অভিষেককে দেখা যাবে? এই সম্ভাবনা একেবারে না উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল বিধায়ক তরুণ মাইতি বলেন, ‘‘আগামী সপ্তাহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এলেও সমস্যা হবে না।’’