তোড়জোড়: মন্দিরতলা শ্মশানে। নিজস্ব চিত্র
ভোট চাইতে আসেননি। তবে ইতিহাস সৃষ্টিকারী জয়ের পরে রেলশহরের মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে আসছেন তৃণমূল নেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের হাত ধরে খড়্গপুরে জয় আসায় মুখ্যমন্ত্রীর হাতে গুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের আয়োজনও করছে পুরসভা। সেই মতো শুরু হয়েছে প্রস্তুতি।
আগামী ৯ ডিসেম্বর খড়্গপুরে পরিষেবা প্রদানের প্রশাসনিক জনসভায় হাজির থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। সভা থেকে উপভোক্তাদের পাট্টা, সাইকেল, আবাস যোজনা-সহ নানা প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা বিলি করবেন তিনি। পাশাপাশি পুরসভার উন্নয়নের একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করবেন।
এ বার উপ-নির্বাচনের প্রচারে তৃণমূলের স্লোগানই ‘ভোট ফর ডেভেলপমেন্ট’। পুরসভার মাধ্যমে রাজ্য সরকারের নানা উন্নয়নের কথা তুলে ধরা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, শহরের শ্মশানঘাটের উন্নয়ন, চুল্লি নির্মাণ, পার্ক গড়ার কথা। আবার ‘প্রদীপের পঞ্চপ্রতিজ্ঞা’ শীর্ষক ইস্তাহারে মালঞ্চ ও কৌশল্যার জলাশয়ের উন্নয়ন, হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন, পার্ক, সৌন্দর্যায়ন-সহ নানা অঙ্গীকার করা হয়েছিল। এ বার সে সব পূরণ করার পালা। দিন কয়েক আগেই হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন, অডিটোরিয়াম, ইন্ডোর স্টেডিয়াম-সহ কয়েকটি প্রকল্পের অনুমোদনের দাবি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন নব-নির্বাচিত বিধায়ক তথা পুরপ্রধান। মুখ্যমন্ত্রী এসে সেগুলি ঘোষণা করেন কি না সেটাই দেখার। যদিও প্রদীপ বলছেন, “আমি অডিটোরিয়াম, হাসপাতালের উন্নয়ন-সহ যে প্রকল্পের দাবি কয়েকদিন আগে দিদিকে জানিয়েছি সেগুলি শহরে প্রয়োজন। তবে মঞ্চে সেগুলি ঘোষণার বিষয়টি দিদি ঠিক করবেন। দিদি যা করবেন সেটাই মাথা পেতে নেব।”
মমতার অপেক্ষায়
উদ্বোধন
মন্দিরতলা শ্মশানে নতুন বিদ্যুৎ চুল্লি
শ্রীকৃষ্ণপুরে শিশুদের পার্ক
গুরুদ্বার এলাকায় শিশুদের পার্ক
আরামবাটিতে শিশুদের জন্য পার্ক
শিলান্যাস
কৌশল্যার পুকুর সংস্কার ও ঘাট নির্মাণ
মালঞ্চ গিড্ডু জমিদারের পুকুর ঘাট সংস্কার
আইআইটি উড়ালপুলের নীচের উদ্যানে সৌন্দর্যায়ন
কৌশল্যার বিবেক উদ্যানে সৌন্দর্যায়ন
পুরসভার কাজের নমুনা তুলে ধরতে ওই দিন নবনির্মিত মন্দিরতলা শ্মশানের বিদ্যুৎ চুল্লির উদ্বোধন হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। ২০১৬ সাল নাগাদ ওই চুল্লির কথা জেলাশাসককে জানিয়েছিলেন পুরপ্রধান। ২০১৭সালে চুল্লির অনুমোদন হয়। প্রায় ১ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পূর্ত দফতর ওই চুল্লি নির্মাণ করেছে। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পুরসভার। শহরের বুকে এই বিদ্যুৎ চুল্লির উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই করাতে চলেছে পুরসভা। একই সঙ্গে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রীকৃষ্ণপুর, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের গুরুদ্বারের পার্ক উদ্বোধন হবে। আরও কয়েকটি পার্ককে দ্রুত সাজিয়ে উদ্বোধনের চেষ্টা চলছে।
ইস্তাহারের প্রতিশ্রুতি মতো কৌশল্যার একটি পুকুর ও মালঞ্চর গিড্ডু জমিদারের পুকুরঘাটের পূর্ণ সংস্কার-সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের শিলান্যাস হবে। এ ছাড়া কৌশল্যার বিবেক উদ্যান, আইআইটি উড়ালপুলের নীচে সৌন্দর্যায়নের শিলান্যাস হবে। খড়্গপুরের পুরপ্রধান তথা নব-নির্বাচিত বিধায়ক প্রদীপ বলছেন, “আমরা যে কাজ করি এ সবই তার প্রমাণ। নির্বাচনের আগে দিদি ভোট চাইতে শহরে আসেননি। কিন্তু মানুষ ভোটে জেতানোর পরে উপহার-সহ ধন্যবাদ জানাতে আসছেন। এর থেকে বড় প্রাপ্তি কী হতে পারে!”