উদ্বোধন হওয়া বাস টার্মিনাস। নিজস্ব চিত্র।
প্রতিশ্রুতি ছিল কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের। কিন্তু মিলল কেবল দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাস টার্মিনাস।
মঙ্গলবার হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে ভার্চুয়ালি এর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার পরই উঠেছে নানা প্রশ্ন। বেলদাবাসীর অভিযোগ, সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের প্রতিশ্রুতি উধাও, তার জায়গায় মিলেছে এসবিএসটিসির বাস টার্মিনাস। ফলে বেসরকারি বাসগুলির দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সমস্যা থেকেই গেল। শুধু তাই নয়, উদ্বোধন হওয়া বাস টার্মিনাসের কাজের মান নিয়ে এ দিন প্রশ্ন তুললেন বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট।
এ দিন সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাস টার্মিনাসের উদ্বোধন হয়েছে। ২০১৬ সালে নারায়ণগড়ে বিধায়ক পায় তৃণমূল। জিতেছিলেন প্রদ্যোৎ ঘোষ। তারপর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের দাবি জোরাল হয়। শুরু হয় জমি পরিদর্শন। সরকারের নির্দেশ ছিল নতুন করে জমি অধিগ্রহণ না করেই বাসস্ট্যান্ড গড়তে হবে। সেই মতো বেলদা পূর্ত দফতরের বাংলোর ১.৩২ একর জমি পরিবহণ দফতর অধিগ্রহণ করে। সেই জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাস টার্মিনাস। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে ভার্চুয়াল শিলান্যাস করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ব্যয় হয়েছে এক কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা। যা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিধায়ক। এ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রশাসনিক আধিকারিকদের সামনেই ঠিকাদার সংস্থা ও কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ বা পরিকল্পনা না করেই কাজ করার অভিযোগও তোলেন তিনি। বিধায়ক বলেন, ‘‘সরকার যা বরাদ্দ করেছে সেই মতো কাজ হয়নি। যদিও বিষয়টি আমার দেখার কথা নয়। তবে এলাকার উন্নয়নের সঙ্গে বিষয়টি যুক্ত। তাই একটু ক্ষোভ প্রকাশ করেছি।’’ বাসস্ট্যান্ডে কবে থেকে বাস ঢুকবে, তা এখনও জানা যায়নি। এ ব্যাপারে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের জঙ্গলমহল ডিভিশনের ম্যানেজার সুভাষ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। উত্তর দেননি টেক্সট মেসেজেরও।
স্থানীয় অনেকের অভিমত, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বেলদাবাসীকে চমক দিয়েছিল সরকার। ফের লোকসভা নির্বাচনের আগে অসম্পূর্ণ বাস টার্মিনাস উদ্বোধন হল। কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের ভাবনার কোনও উন্নতি হল না। যদিও বিধায়ক এ দিন জানান, এই বাস টার্মিনাস আগামী দিনে আরও আধুনিক হবে। বেসরকারি বাসও ঢুকবে। তবে এ বিষয়ে বিজেপি কটাক্ষ করতে ছাড়েনি সরকারকে। জেলা সাধারণ সম্পাদক গৌরীশঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের কথা বলে এখন এসবিএসটিসির বাস টার্মিনাস হল। তা-ও অসম্পূর্ণ। নির্বাচনের আগে মানুষ আর এ সবে ভুলবে না।’’
বুধবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে পশ্চিম মেদিনীপুরের আরও কিছু প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবংয়ে দমকল কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর হাতে এটির উদ্বোধন হয়েছে। সবংয়ে অনুষ্ঠানে ছিলেন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার প্রমুখ। সবংয়ের কাছেপিঠে এতদিন দমকল ছিল না। সবংয়ের বোনাইয়ে কেন্দ্রটি গড়ে উঠেছে। গোয়ালতোড়েও বাস টার্মিনাসের উদ্বোধন হয়েছে। এটি তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ লক্ষ ৫ হাজার টাকা। কেশপুরে বাস ‘বে’ গড়ে উঠবে। মেদিনীপুর- কেশপুর- ঘাটাল রাজ্য সড়কের পাশে দু’টি যাত্রী প্রতীক্ষালয় গড়ে উঠবে। এই প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছে। কেশপুরে বাস ‘বে’ তৈরিতে খরচ হবে প্রায় ২৯ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা।