বাজাও: এক আদিবাসীর হাতে মাদল তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার দিঘায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
ঢেলে সাজা হচ্ছে দিঘা।
তাজপুরে ১২ হাজার কোটি টাকা খরচে গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে। এর ফলে আরও বেশি কর্মসংস্থান হবে। মঙ্গলবার দিঘায় এক গুচ্ছ সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করে এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ে হিংসাত্মক কাজকর্ম চলায় মানুষ মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। দিঘায় দেড় থেকে দু’লক্ষ পর্যটক আসছেন। পর্যটনের স্বার্থেই এই সমুদ্রশহরে আরও উন্নয়ন জরুরি।’’
কী সেই উন্নয়ন?
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘দিঘা লাগোয়া তাজপুর ও উদয়পুর সমুদ্রসৈকত নতুন করে গড়ে তোলা হচ্ছে। শঙ্করপুরেও উন্নয়ন চলছে। মন্দারমণিকে আইনের বাঁধনে বেঁধে পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তোলা হচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সাগরে লোহার সেতু হবে। সেটা শেষ হয়ে গেলে কলকাতা থেকে দিঘায় অনেক কম সময়ে চলে আসা যাবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘কন্যাশ্রীর মতো এটাও এক দিন দিঘাশ্রী হবে। পর্যটকদের ঢল নামবে। লক্ষ্মী লাফাবে।’’
যে হেতু পর্যটকদের জন্যই দিঘার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তাই এখানে ঘুরতে এসে পর্যটকেরা যাতে কোনওভাবেই হয়রানির শিকার না হন, সে ব্যাপারে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন নিগমের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘রাস্তা আটকে, চলাফেরায় অসুবিধা করে দোকান বসানো যাবে না। প্রয়োজনে হকার্স কর্নার করে দোকানিদের বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’’
পর্যটনের মরসুমে পর্যটকদের কাছ থেকে খেয়াল খুশিমতো ভাড়া চাওয়ার অভিযোগ ওঠে দিঘার এক শ্রেণির হোটেল মালিকদের বিরুদ্ধে। তিনি যে সে বিষয়ে অবগত তা এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘বুধবারের প্রশাসনিক বৈঠকে আমি হোটেল মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের ডেকেছি। ওঁদের সঙ্গে কথা হবে।’’
পশ্চিম মেদিনীপুরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় আছে। তাই পূর্ব মেদিনীপুরেও একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আবেদন জানিয়েছেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। দিঘার সভায় মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সেই প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘মেদিনীপুর ভাগ হলেও দুই জেলাকে আমরা আলাদা ভাবি না। তা সত্ত্বেও শিশিরদা বলেছেন। আমি আজ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি চাই এখানে একটা ভাল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হোক।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, শিক্ষামন্ত্রী তাঁকে কথা দিয়েছেন, তিনি করে দেবেন। তা হলে আর এখানকার ছেলেমেয়েদের অন্যত্র যেতে হবে না।
কাঁথি হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজে রূপান্তরিত করার দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখনই কাঁথি হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজ হিসেবে ঘোষণা করা যাবে না। কারণ, ওই হাসপাতালে ২৫৫টি শয্যা আছে। ৩০০ শয্যা না থাকলে ওই তকমা দেওয়া যায় না।’’ তাঁর ঘোষণা, ‘‘আমি আগে ৪৫টি শয্যা বাড়াই। তবে শুধু শয্যা বাড়ালেই হবে না। উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। তারপরে মেডিক্যাল কলেজের মর্যাদা দেওয়া যাবে। এটা আমার ভবিষ্যতের পরিকল্পনা রইল।’’