মহিষাদল রাজ কলেজের এই ভবন উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এক দিন আগেই শিল্পশহরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সূচনা করেছেন। সেই সভায় আমন্ত্রিত থাকলেও গরহাজির ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মোদীর ফিরে যাওয়ার পরদিন সোমবারই তিনি পূ্র্ব মেদিনীপুরের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন।
এদিন কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ভার্চুয়ালি মহিষাদল রাজ কলেজের নব নির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন। রাজ কলেজে সাত কোটি ১০ লক্ষা টাকায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নামে শীতাতপ প্রেক্ষাগৃহ এবং কলেজেই রবীন্দ্র ভবন গড়ে তোলা হয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার দিয়েছে দু’কোটি ২৪ লক্ষা এবং রাজ্য দিয়েছে চার কোটি ৮৬ লক্ষা ৩৫ হাজার টাকা। কলেজের ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলাশাসক বিভু গোয়েল, মহিষাদল রাজ কলেজের অধ্যক্ষ অসীম কুমার বেরা, মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুব্রত কুমার দে,
কলেজে পরিচালন সমিতির সভাপতি তিলক চক্রবর্তী।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জেলা জুড়ে ১৩৩টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে উন্নীত করেছেন। বিশেষ শিক্ষাপ্রাপ্ত কমিউনিটি স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে থাকবেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি
সুগার এবং হাইপারটেনশনের চিকিৎসা হবে সেখানেই।
এ দিন তমলুক জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক ভবনে রক্তের উপদান পৃথকীকরণ কেন্দ্র বা ‘ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন ইউনিটে’রও উদ্বোধন হয়েছে। নতুন ইউনিটে রক্তের বিভিন্ন উপদান পৃথক করার জন্য ব্লাড কম্পোনেন্ট ‘সেপারেটর’ যন্ত্র-সহ রক্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলায় এ ধরণের ইউনিট এটিই প্রথম।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল জানিয়েছেন, জেলাবাসীদের দাবি মতো ওই ইউনিট চালু হয়েছে। এখানে এক ইউনিট রক্তের বিভিন্ন উপাদান পৃথক করে চারটি ইউনিট করা যাবে। এতে চারজন রোগীকে তাঁদের প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করা যাবে। এই ইউনিট চালু হওয়ায় থ্যালাসেমিয়া এবং ডেঙ্গির মতো রোগীর রক্তের যোগান দিতও সুবিধা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত পেট্রোলিয়ামের এলপিজি ইমপোর্ট গ্যাস টার্মিনাল, বিহারের ধোবি থেকে দুর্গাপুর পর্যন্ত প্রায় ৩৪৭ কিলোমিটার দীর্ঘ উর্যা গঙ্গা প্রকল্প এবং একটি উড়ালপুলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরদিনই মুখ্যমন্ত্রীর নতুন প্রকল্পের সূচনা নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ভোট আগে আমজনতার মন জয় করতে উদ্যোগী কেন্দ্র-রাজ্য উভয় পক্ষই।
যদিও রাজ্যের মন্ত্রী তথা পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘গোটা জেলা জুড়ে এত উন্নয়ন, বিজেপি চোখে দেখতে পাচ্ছেন না। ইমপোর্ট টর্মিনাল, ফ্লাইওভার ও দুর্গাপুরের
পাইপলাইন উদ্বোধন করে ক’জনের কর্মসংস্থান হয়েছে!
আবার, বিজেপির তমলুক জেলা সাংগঠনিক সভাপতি নবারুণ নায়েকের কটাক্ষ, ‘‘ভবন প্রেক্ষাগৃহ উদ্বোধন করে কর্মসংস্থান হয় না। মোদীজি শিল্পের উন্নয়ন করে
বুঝিয়ে দিয়েছেন কর্মসংস্থান কী করে করতে হয়।’’