ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ার কথা ছিল ওড়িশা লাগোয়া পাঁচটি ব্লক দাঁতন ১, দাঁতন ২, মোহনপুর, নারায়ণগড় ও কেশিয়াড়িতে। তবে প্রভাব সে ভাবে না পড়লেও ঘূর্ণিঝড়ের জেরে বৃষ্টিতে ধান ও আনাজ চাষে ক্ষতি হয়েছে এইসব এলাকায়। ঝড় পরবর্তী সময়ে ব্লক গুলির পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার ফোনে এলাকার বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধানের কাছ থেকে মুখ্যমন্ত্রী দাঁতন, মোহনপুরের খোঁজ নেন। ফোনেই কেশিয়াড়ির বিধায়ক পরেশ মুর্মু ও নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্টের কাছ থেকে এলাকার কথা জানেন মমতা। নবান্নে ঘূর্ণিঝড়ের পর্যালোচনা বৈঠকে সে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘আমি কথা বলে জেনেছি মোহনপুর, দাঁতনের পরিস্থিতি। সেখানে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে।’’ দাঁতনের বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান জানান, জেলাশাসকের টিম ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সহযোগিতা ও ভাল কাজ করেছে। সে কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর ফোন পান বিধায়ক। বিক্রম বলেন, ‘‘এলাকার খবর জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না। আমি সবটা জানিয়েছি।’’
কেশিয়াড়ির বিধায়ক পরেশ মুর্মু এ দিন একাধিক এলাকা ঘুরে কয়েকটি পরিবারের হাতে ত্রিপল তুলে দেন। কেশিয়াড়ির খাজরা ও অন্ত্রি এলাকায় কয়েকটি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলির হাতে ত্রিপল তুলে দিয়েছেন পরেশ। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কাছে ফোনে এলাকার পরিস্থিতির কথা জানতে চান। আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তাই এলাকায় থেকে কাজ করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। শুধু বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলাই নয়। মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ মতো এ দিন বিকেলে দাঁতন ২, দাঁতন ১, নারায়ণগড়, কেশিয়াড়ি ব্লকে পরিদর্শনে এসে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে পর্যালোচনা করেন মন্ত্রী।
দুর্যোগ কাটার পর আশ্রয় শিবির থেকে অনেকেই ঘরে ফিরেছেন। অনেকে ফিরে যেতে চাইছেন। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, অনেককেই আরও একদিন আশ্রয় শিবিরে রাখা হবে। মানস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মানুষের জন্য চিন্তিত। সারারাত জেগেছেন। জেলায় চাষের ক্ষতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন সার্ভে করে দেখা হবে।’’ প্রশাসন জানাচ্ছে, দাঁতন ১ ব্লকে ২২টি ক্যাম্পে ৪৭০০জন, দাঁতন ২ ব্লকে ১৯টি ক্যাম্পে ৪৮০০জন, কেশিয়াড়িতে ২১টি ক্যাম্পে ৩১০০জন, মোহনপুরে ৬৩টি ক্যাম্পে ১১৭৫০জন ও নারায়ণগড়ে ৩৫টি ক্যাম্পে ১৪০০জন ছিলেন।
এ দিন সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রাম জেলা কালেক্টরেটে পর্যালোচনা বৈঠক করেন সেচ ও জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের সমস্ত জন প্রতিনিধি, বিধায়কেরা বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। সমস্ত দফতরের আধিকারিকরা ছিলেন। মানস এ দিন জেলাশাসকের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এখানে এসেছি। জেলাশাসক ও বিরবাহা খুব ভাল কাজ করেছে। জেলায় সে ভাবে ক্ষতি হয়নি। চাষের ক্ষতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ জেলাশাসকের মাধ্যমে বিডিওদের জানিয়েছি যা লাগবে তাই দেওয়া হবে। কেউ যেন বঞ্চিত না হন।’’