জলমগ্ন নন্দীগ্রাম। —নিজস্ব চিত্র
জলমগ্ন পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। ওই বিধানসভা কেন্দ্রের বিপুল চাষ জমিও জলের তলায়। টানা দু’দিন ধরে বৃষ্টিতে এই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বুধবার বিকেলের পর থেকে টানা বৃষ্টিতে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে।
নন্দীগ্রামের হলদি নদীর তীরবর্তী কেন্দামারি, কালীচরণপুর, গড়চক্রবেড়িয়া, সোনাচূড়া-সহ একাধিক এলাকা জলমগ্ন। জলের তলায় চলে গিয়েছে চাষের জমিও। বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে ওই এলাকায়। যদিও প্রশাসন একে বন্যা বলতে নারাজ। প্রশাসনের মতে, টানা দু’দিন ধরে চলা বৃষ্টিতে হলদি নদী এবং রূপনারায়ণের জল ফুলে ফেঁপে উঠেছে। এর পাশাপাশি অশান্ত সমুদ্রও। যার জেরে জল নিকাশ সম্ভব নয়। তার জেরেই এই জলমগ্ন অবস্থা বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। নন্দীগ্রামের একটি বড় অংশের জমিও জলমগ্ন। তার জেরে কৃষকদের মাথায় হাত।
নন্দীগ্রাম ব্লক তৃণমূলের সভাপতি স্বদেশ দাস বলেন, ‘‘ইয়াসের থেকেও খারাপ পরিস্থিতি হয়েছে নন্দীগ্রামে। ঝড়ের সময় নদীর জল ফুলে ওঠায় কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। কিন্তু গতকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে গোটা নন্দীগ্রামের প্রায় সমস্ত কৃষি জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। নদীতে জলের চাপ ক্রমশ বাড়তে থাকায় হলদি এবং হুগলি নদী তীরবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে।’’ তবে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দুকুমার মাজি অবশ্য বলেন, ‘‘একটানা বৃষ্টিতে খালবিল ভরে গিয়েছে। এর জন্য কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে এখনও জেলায় বন্যা পরিস্থিতি নেই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বৃষ্টিপাত থেমে গেলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। অধিকাংশ জায়গা থেকেই দ্রুত জল নেমে যাব।’’
জল ঢুকেছে নন্দীগ্রামের জনবসতি এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
নন্দীগ্রামের পাশাপাশি জলমগ্ন হলদিয়াও। হলদিয়া টাউনশিপ এলাকার একটি বড় অংশ জলের তলায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা অনেকেই বলছেন, কিছু দিন আগে ইয়াস এবং ভরা কটালের জেরেও এমন অবস্থা তৈরি হয়নি। হলদিয়া পুরসভার কাউন্সিলর আজগর আলি বলেন, ‘‘জলের চাপেই হলদিয়া পুরসভার একাধিক এলাকা জলমগ্ন। নদীর জল ফুলেফেঁপে ওঠায় জল নিকাশি ব্যবস্থাও কাজে আসছে না। ইতিমধ্যেই শতাধিক মানুষকে ত্রাণশিবিরে সরানো হয়েছে। কয়েকটি স্কুলে ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় অবস্থিত একাধিক কারখানা চত্বরও জলমগ্ন। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করছে পুরসভা।’’ এ ভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তিনি।