অবরোধে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
হাতে আর মাত্র পাঁচ দিন। এখনও হাতে অ্যাডমিট কার্ডই পায়নি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। প্রতিবাদে টায়ার জ্বেলে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল পরীক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে সামিল হলেন অভিভাবকেরাও।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় কাঁথি শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দারুয়া এলাকায়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদ ঘিরে জটিলতার জেরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড বিলি আটকে রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ কাঁথি শহর থেকে মহকুমা হাসপাতাল যাওয়ার রাস্তা আটকে বিক্ষোভ শুরু করে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে অভিভাবকেরাও স্কুলের সামনে রাস্তায় টায়ার জ্বেলে বিক্ষোভ দেখান। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথি রহমানিয়া মাদ্রাসার মাধ্যমিক পরীক্ষার আসন পড়েছে স্থানীয় কাঁটাবনিতে। ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মাদ্রাসা বোর্ডের অধীন মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অধিকাংশ পড়ুয়া অ্যাডমিট কার্ড পায়নি বলে অভিযোগ। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর ৫৮ জন মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। গত বছর ডিসেম্বর মাসে ফর্ম ফিলাপ করে মাদ্রাসা বোর্ডের তহবিলে অর্থ জমা দেওয়া হয়। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে অ্যাডমিট কার্ড সংগ্রহ করার জন্য নন্দকুমারের একটি মাদ্রাসায় ডেকে পাঠানো হয়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মইদুল আলি খান বলেন, ‘‘সমস্ত পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ড সংগ্রহ করার জন্য মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানের তরফে একজন করণিককে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অ্যাডমিট কার্ড দিতে রাজি হয়নি। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে প্রশাসন এবং ওই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু উত্তর মেলেনি।’’
রহমানিয়া মাদ্রাসা হাইস্কুলের পরিচালন কমিটির সম্পাদক আব্দুর রহমান(মনি)বলেন, ‘‘আগে ফিরোজ খান নামে এক শিক্ষককে নানা দুর্নীতির অভিযোগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকে তিনি স্কুলে আসেননি। তবু তাঁরই কারসাজিতে স্কুলেরই এক করণিক গোপনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কয়েক জন পরীক্ষার্থীকে অ্যাডমিট কার্ড দিয়ে এসেছেন শুনেছি। তবে নিয়মমাফিক যাতে সব পরীক্ষার্থীর হাতে অ্যাডমিট কার্ড পৌঁছয় সেই দাবিতে আমরা হাইকোর্টে ১৫ ফেব্রুয়ারি মামলা করেছি। ২০ ফেব্রুয়ারি মামলার শুনানি রয়েছে।’’
এদিকে পরীক্ষার মুখেও অ্যাডমিট কার্ড না পাওয়ায় শঙ্কিত পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা। রবিউল ইসলাম নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘স্কুল থেকে অনেক দূরে পরীক্ষাকেন্দ্র। অ্যাডমিট কার্ড এখনও মেলেনি। ফলে ছেলেকে কোথায় রাখব! কী ভাবে পরীক্ষা দেবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’’ এদিকে বিক্ষোভের জেরে রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে অসুবিধায় পড়েন তাঁদের পরিবারের লোকজন। দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনিক আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।
কাঁথির মহকুমাশাসক সৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সরাসরি স্কুল থেকেই যাতে সমস্ত পরীক্ষার্থীরা অ্যাডমিট কার্ড পায় তার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মাফিক অ্যাডমিট কার্ড বিলির কাজ শুরু হয়েছে।’’