Madhyamik 2023

পরীক্ষাকেন্দ্রের পথে হাতি আটকাতে বাড়তি সতর্কতা 

এমনিতেই পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার বনাঞ্চলে এখন প্রায় সারা বছরই হাতি থাকে। হাতির হানায় প্রাণহানিও হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:২৬
Share:

জঙ্গল রাস্তায় পাহারায় রয়েছেন বন কর্মীরা। মেদিনীপুর সদরের চাঁদড়া রেঞ্জের ভাদুলিয়ার জঙ্গলে। নিজস্ব চিত্র

জলপাইগুড়িতে হাতির আক্রমণে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা পরে বাড়তি সতর্ক হচ্ছে বন দফতর। এদিন দুপুরেই রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক প্রতিটি জেলা প্রশাসন ও বন দফতরের সঙ্গে ‘ভার্চুয়াল’ মাধ্যমে জরুরি বৈঠক করেন বলে জানা গিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বন দফতরের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘বনমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বৈঠকে মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনগুলিতে আমাদের আরও বাড়তি নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে।’’

Advertisement

এমনিতেই পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার বনাঞ্চলে এখন প্রায় সারা বছরই হাতি থাকে। হাতির হানায় প্রাণহানিও হয়। তাই এবার আগে থেকেই মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় হাতির আনাগোনার রাস্তাগুলিতে গাড়ি নিয়ে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছিল বন দফতরকে। পরীক্ষা শুরুর দিনেই জলপাইগুড়ির ঘটনা সেই নজরদারিতে বাড়তি মাত্রা যোগ করল। এদিন অবশ্য সকাল থেকেই দুই জেলায় বনকর্মীদের বাড়তি নজরদারি চালাতে দেখা গিয়েছে। শালবনি, গোয়ালতোড়, ঝাড়গ্রামের একাধিক এলাকায় টহল দিয়েছেন তাঁরা। কোথাও কোথাও হাতি তাড়ানোর ‘ঐরাবত’ গাড়ি নিয়ে জঙ্গল রাস্তায় টহল দিয়েছেন বন আধিকারিকেরা। অনেক জায়গায় মাইকে প্রচার চলেছে। বন দফতর সূত্রে খবর, মাধ্যমিক পরীক্ষা যতদিন চলবে, ততদিনই এই তৎপরতা চালানো হবে। মেদিনীপুরের ডিএফও সন্দীপ বেরোয়াল বলেন, ‘‘জঙ্গলপথে যাতায়াতের সময়ে পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। চলছে নজরদারি।’’

দুই জেলার বন দফতর সূত্রেরই দাবি, পরীক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতায়াত করতে পারে তার জন্য একাধিক স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়েকটি এলাকাকে ‘বিপদপ্রবণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। হাতি চলাচলের ‘করিডর’ বলে পরিচিত এলাকায় বাড়তি নজরদারি ছিল। জঙ্গলপথে যথেষ্ট সংখ্যক হুলাপার্টি মোতায়েন করা হয়েছে। মেদিনীপুর বন বিভাগের অধীন এলাকায় এখন কমবেশি ৫০টি হাতি রয়েছে। লালগড় রেঞ্জের পড়ডিহায় রয়েছে ১৫-১৬টি হাতি। মেদিনীপুর গ্রামীণের চাঁদড়া, শালবনির পিড়াকাটা রেঞ্জ এলাকায় একাধিক ‘রেসিডেন্সিয়াল’ হাতি রয়েছে। রূপনারায়ণ ডিভিশনের অন্তর্গত জঙ্গলেও রয়েছে অনেক গুলি হাতি। গোয়ালতোড়ের রামগড় এলাকাতেও একাধিক হাতি ঘোরাঘুরি করছে। দলছুট কয়েকটি হাতিও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এদিন গোয়ালতোড়ের ঢেকিনাজা জঙ্গল রাস্তায় ‘ঐরাবত’ গাড়ি নিয়ে টহল দিতে দেখা যায় বনকর্মীদের। হুমগড় এলাকাতেও নজরদারি ছিল। রূপনারায়ণের ডিএফও মনীশ যাদব বলেন, ‘‘জঙ্গল পথে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে যাতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য আমরা সদা সতর্ক। নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। থাকছে গাড়ির ব্যবস্থাও।’’

Advertisement

খড়্গপুর বনবিভাগের চাঁদাবিলা, কলাইকুন্ডা, নয়াগ্রাম এবং কেশররেখা রেঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় বনকর্মীরা ছিলেন। হাতি চলাচলের রাস্তায় বনদফতরের পেট্রলিং ভ্যান ছিল। কিছু জায়গায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের হাতি চলাচলের ‘করিডর’ থেকে মোটরবাইকে করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার খড়্গপুর ডিভিশনে ২৭টি ও ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে ৬টি হাতি ছিল। খড়্গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, ‘‘বিভিন্ন বন্যপ্রাণী, মূলত হাতির আক্রমণে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য পেট্রলিং ভ্যান রয়েছে। হাতি চলাচলের করিডর এলাকায় বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ঘন জঙ্গলের মধ্যে সাইকেলে করে যাওয়া মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বন বিভাগের বিশেষ গাড়িতে করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ ঝাড়গ্রামের ডিএফও শেখ ফরিদ জানান, বন দফতরের লোকজন স্কুল সংলগ্ন এলাকায় থাকছেন। জঙ্গল রাস্তা ব্যবহার করতে নিষেধ করে মাইক প্রচার চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement