খড়্গপুর ট্র্যাফিক স্কুলের সামনে টিএমসিপির শিবির। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশের ১০০ মিটার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। কিন্তু পরীক্ষাকেন্দ্রের গেটের বাইরেই সহায়তা শিবির করল করল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। স্থানীয় বিধায়ক, তৃণমূলের জেলা সভাপতি -সহ সেখানে ঘুরেও গেলেন অনেকেই।
মঙ্গলবার শহরের ট্রাফিক হাইস্কুলের বাইরে ওই সহায়তা শিবিরের আয়োজন করেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। স্কুলের গেটের উল্টোদিকে চাঁদোয়া টাঙিয়ে ও তৃণমূলের পতাকা বেঁধে চেয়ার পেতে অভিভাবকদের বসার ব্যবস্থা হয়েছিল। পরীক্ষা শুরুর পর থেকেই সেখানে ভিড় বাড়তে থাকে। আসেন প্রদীপ সরকার, উপ-পুরপ্রধান শেখ হানিফ, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। নিয়ম অমান্য করে কীভাবে এই শিবির হল সেই প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ এলেও দেখে ফিরে যায়। কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হতে শিবির সরিয়ে দেওয়ার কথা জানান তৃণমূল নেতারা। তবে মঙ্গলবার পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত ওই শিবির সরানো হয়নি। বিজেপি এই বিষয়ে মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে।
ওই শিবির থেকে ঢিল ছোড়া দূরেই রয়েছে মহকুমাশাসকের কার্যালয়। মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “১৪৪ ধারা জারি থাকা জমায়েত করা যাবে না। এক্ষেত্রে কী হয়েছে আমি খোঁজ নিচ্ছি।”
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, শহর ও গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন স্কুলের বাইরেই এমন সহায়তা শিবির করা হয়েছে। তবে স্কুলের গেটের একেবারে উল্টো দিকে এমন শিবির অন্য কোথাও হয়নি। বিজেপির শহর মধ্য মণ্ডল সভাপতি শ্রীতারকেশ্বর রাওয়ের প্রশ্ন, “১৪৪ ধারা থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষাকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে এমন শিবিরের অনুমতি কে দিল তৃণমূলকে? এটা পরীক্ষার্থীদের সাহায্য হচ্ছে না সমর্থক তৈরির শিবির হচ্ছে?” বিজেপির রাজ্য জোনাল আহ্বায়ক তুষার মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের জন্য ১৪৪ ধারা বোধহয় প্রযোজ্য নয়। পুলিশ-প্রশাসনের উচিত অন্তত শিক্ষার বিষয়ে মেরুদণ্ড সোজা রাখা।”
খড়্গপুরের পুরপ্রধান তথা বিধায়ক প্রদীপ সরকার বলেন, “পরীক্ষার্থীদের সাহায্যের জন্যই আমাদের ছাত্র সংগঠন ওই শিবির করেছে। ১০০ মিটারের বাইরে শিবিরের কথা ওদের জানা ছিল না। আমরা জায়গা বদলাতে বলেছি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিরও বক্তব্য, ‘‘ছাত্র সংগঠনের ছেলেরা না বুঝেই ভুল করে একশো মিটারের মধ্যে শিবির করেছে। আমি দেখার পরে সরিয়ে নিতে বলেছি।’’ তাঁর পাল্টা কটাক্ষ, বিজেপি তো মানুষের কোনও সাহায্য করে না। কেউ করলেও রাজনীতি করে। টিএমসিপির খড়্গপুর শহর সভাপতি আকাশ মেহেতাও জানান, ওই শিবির সরিয়ে নেওয়া হবে।