ফাইল চিত্র।
আদিবাসীদের পাশাপাশি ঝাড়গ্রাম লোকসভায় কুড়মি ভোটারও যথেষ্ট। পরিসংখ্যান বলছে, জঙ্গলমহলের এই কেন্দ্রে মোট ভোটারের ২২ শতাংশ কুড়মি। আর পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও মেদিনীপুর মিলিয়ে জঙ্গলমহলের লোকসভা কেন্দ্রগুলি ধরলে কুড়মি ভোটার রয়েছেন প্রায় ৪২ শতাংশ। সেই অঙ্কে লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের দাবিদাওয়া আদায়ে সরব হল ‘আদিবাসী কুড়মি সমাজ’। সংগঠনের উদ্যোগে আজ, সোমবার দুপুরে লালগড় ফুটবল মাঠে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে।
সংগঠনের মূল দাবি, কুড়মিদের পুনরায় আদিবাসী (এসটি) তালিকাভুক্ত করতে হবে, কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং ‘কোড’-সহ সারনা ধর্মের স্বীকৃতি দিতে হবে। এই তিন দফা দাবিতে গত ডিসেম্বরে নয়াদিল্লির রামলীলা ময়দানে দু’দিনের সমাবেশও হয়েছিল। আদিবাসী কুড়মি সমাজের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক রাজেশ মাহাতো জানাচ্ছেন, দাবি আদায়ে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ হচ্ছে। ১৯ মার্চ পুরুলিয়ায় সমাবেশ হয়েছে। ২৭ মার্চ বাঁকুড়ার রাইপুরে এবং ২৯ মার্চ পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর গ্রামীণের খেমাশুলিতে সমাবেশ হবে।
কিন্তু ভোটে কী অবস্থান নেবেন কুড়মিরা? রাজেশের জবাব, ‘‘৩০ মার্চ বাঁকুড়ায় বৈঠকের পরে নির্বাচনে কোন দলকে কুড়মি সমাজ সমর্থন করবে সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
২০১৪-র লোকসভা ও ১০১৬-র বিধানসভা ভোটে কুড়মিদের সিংহভাগ ভোটই পেয়েছিল তৃণমূল। কুড়মি ভোটে জিতেই (গোপীবল্লভপুর বিধানসভা) অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী হন চূড়ামণি মাহাতো। তবে গত পঞ্চায়েত ভোটে নিজের এলাকা ঝাড়গ্রাম ব্লকের শালবনিতে খারাপ ফলের জেরে মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয় তাঁকে। রাজ্যের ‘আদিবাসী তোষণ’ নিয়ে সরব কুড়মিদের অভিযোগ, তাঁদের দুয়োরানি করে রাখা হয়েছে। যাবতীয় সুযোগ সুবিধে পাচ্ছেন আদিবাসীরা। রাজেশের মতে, ‘‘ প্রকৃতপক্ষে কুড়মিদের জন্য কিছুই করা হয়নি। যতটুকু হয়েছে, তা ভোট-রাজনীতির স্বার্থে।’’
জেনেভায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ঝাড়গ্রামের বিদায়ী সাংসদ উমা সরেন কুড়মিদের আদিবাসী তালিকাভুক্ত করার দাবিতে সওয়াল করায় বিক্ষোভ হয়েছিল। ফলে, এ বার ভোটে কুড়মিরা কী অবস্থান নেন, সে দিকে তাকিয়ে তৃণমূল। তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলেন, ‘‘কুড়মিদের পাশে আমরা আছি।’’ বিজেপি-র জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কেরও একই মত। কুড়মিরা কার পাশে থাকেন, সেটাই এখন দেখার।