এ-ও যেন এক ভ্রান্তিবিলাস। সামাজিক মাধ্যমে প্রথমে ভ্রান্তি। পরে সংশোধন। তবে ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। বিরবাহা সরেনের নামে পাশে ছবি বসেছে অভিনেত্রী বিরবাহা হাঁসদার।
নামে কী বা এসে যায়! এসে তো যায়ই! মঙ্গলবার কালীঘাটে সাংবাদিক বৈঠকে ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ‘মিসেস বিরবাহা সরেন’। কিন্তু জঙ্গলমহলে আরেক বিরবাহা যে বেশি পরিচিত। শুধু জঙ্গলমহল নয়, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশায় বিরবাহা হাঁসদা সাঁওতালি সিনেমার মহানায়িকা হিসেবে সুপরিচিত। একাধিক সাঁওতালি সিনে পুরস্কার রয়েছে বিরবাহার ঝুলিতে। পেয়েছেন জাতীয় অভিনেত্রীর সম্মানও। তবে অভিনেত্রী বিরবাহা হাঁসদা অবিবাহিতা। আর তৃণমূলের প্রার্থী বিরবাহা সরেন হলেন আদিবাসী সামাজিক সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের নেতা রবিন টুডুর স্ত্রী।
কে প্রাথী হবেন তা নিয়ে তৃণমূলের বিভিন্ন মহলে দুই বিরবাহার নাম নিয়ে জল্পনা ছিল। প্রার্থী ঘোষণা শুনে ভুল করে বসলেন খোদ রাজ্য তৃণমূল আদিবাসী সেলের সভাপতি দেবু টুডু। বর্ধমানের নেতা দেবু টুডু গুলিয়ে ফেলেছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৫টা ৫১ মিনিটে দেবু তাঁর ফেসবুক পেজ-এ ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী বিরবাহা সরেনকে ভোটে জয়যুক্ত করার আবেদন জানিয়ে পোস্ট করেন। সেখানে বিরবাহা হাঁসদার ছবি দিয়ে দেন দেবু। ওই পোস্ট ঘিরে বিভ্রান্তি দেখা দেয়। ওই পোস্ট দেখার পরে ঝাড়গ্রামে কয়েকজন তৃণমূল সহ প্রায় ৫০ জন শেয়ার করে ফেলেন। এদিকে অভিনেত্রী বিরবাহা হাঁসদার কাছে একের পর এক ফোন আসতে থাকে। বিরবাহা বলেন, ‘‘সবাই জানতে চান আমিই প্রার্থী কি-না। জবাব দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। গভীর রাত পর্যন্ত ফোন করে লোকজন জানতে চান। বুধবার দুপুর পর্যন্ত ফোন পেয়েছি।’’ পরে অবশ্য ভুলটা ধরা পড়ে। এদিন দুপুর ১ টা নাগাদ দেবু পোস্টটি সরিয়ে দিয়ে বিরবাহা সরেনের ছবি দিয়ে নতুন করে পোস্ট করেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দেবুকে এদিন ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ওই ফেসবুক পেজটা তো চালাই না। আমার ছেলেরা চালায়। ওরা ভুল করে ফেলেছিল। আমি জানতে পেরে পাস্টে দিতে বসেছিলাম। আজকে সংশোধন করে দিয়েছে।’’ দেবু জানান, দল চাইলে তিনি ঝাড়গ্রামে বিরবাহা সরেনের প্রচারে আসবেন। তবে এই ভ্রান্তি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না তৃণমূলেরই একাংশ। সারা বিশ্বের বহু মানুষ ওই পোস্টটি দেখেছেন। বিরবাহা হাঁসদা বলছেন, ‘‘অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য আমি আদালতে মানহানির মামলা করব। নির্বাচন কমিশনেও জানাব। বাংলাদেশ থেকেও আমার ফ্যানেরা ফোন করে জানতে চাইছেন, আমি ভোটে দাঁড়াচ্ছি কি-না।’’
তবে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন বিরবাহা হাঁসদাও। তৃণমূল নয়। হয় ঝাড়খন্ড গোষ্ঠী (নরেন) এর হয়ে। না হলে নির্দল প্রার্থী হয়ে।