তুলির টানে শিক্ষিকা রাতারাতি অধ্যাপিকা

লালগড় ব্লকের রামগড় অঞ্চলে একটি দেওয়াল লিখনে ‘অধ্যাপিকা বিরবাহা সরেনকে বিপুল ভোটে জয়ী করার’ আবেদন জানানো হয়েছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৯ ১০:২১
Share:

সেই দেওয়াল। —নিজস্ব চিত্র

ইঞ্জিনিয়ার হয়েছিলেন ডা: (ডক্টর), শিক্ষিকা হলেন অধ্যাপিকা।

Advertisement

ঝাড়গ্রামে বিজেপির দেওয়ালে তাদের ইঞ্জিনিয়ার প্রার্থীর নামের আগে ‘ডা:’ বসানো নিয়ে কটাক্ষ করেছিল তৃণমূল। এ বার তাদের শিক্ষিকা প্রার্থীর সমর্থনে লেখা দেওয়ালে দেখা গেল ‘অধ্যাপিকা’ শব্দ। এ বার খোঁচা দিচ্ছে বিজেপি।

সাঁওতালদের সামাজিক সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর নেতা রবিন টুডুর স্ত্রী বিরবাহা সরেন এ বার ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী। পেশায় স্কুলশিক্ষিকা এই মহিলা বর্তমানে ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের রোহিণী এলাকার একটি মেয়েদের স্কুলের টিচার-ইনচার্জ। কিন্তু লালগড় ব্লকের রামগড় অঞ্চলে একটি দেওয়াল লিখনে ‘অধ্যাপিকা বিরবাহা সরেনকে বিপুল ভোটে জয়ী করার’ আবেদন জানানো হয়েছে।

Advertisement

বিরবাহা বলছেন, ‘‘আমি শিক্ষিকা। এরকম ভুল হয়ে থাকলে সেটা সংশোধন করে নেওয়া প্রয়োজন।’’ লালগড়ের এক তৃণমূল নেতার সাফাই, ‘‘নিচুতলার বুথের কর্মীরা শিক্ষিকা আর অধ্যাপিকার তফাত হয়তো বুঝতে পারেননি। তাই এরকম লিখে থাকবেন।’’ লালগড় ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শ্যামল মাহাতো বলেন, ‘‘কর্মীদের দেওয়াল লিখনের ভুল সংশোধন করতে বলা হয়েছে।’’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই দেওয়াল লিখনের ছবি পোস্ট করে তৃণমূলকে বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপি ও সিপিএম। বিজেপি কর্মীরা বলছেন, তাদের প্রার্থী কুনার হেমব্রমের সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরে তৃণমূল প্রার্থী বিরবাহাকে অধ্যাপিকা বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্যে সরগরম হয়ে উঠেছে ফেসবুকের দেওয়াল।

খড়গপুর আইআইটি-এর প্রাক্তনী ৫৭ বছরের কুনার বাস্তবে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বিজেপি-র আদিবাসী মোর্চার ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি। ১৯৮৯-১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ভারত সরকারের ন্যাশনাল বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন লিমিটেড (এনবিসিসি)-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন তিনি। চাকরি ছেড়ে ঝাড়গ্রামেই কনসালটেন্সি ফার্ম খোলেন। নয়াগ্রামের এক দেওয়ালে কুনারের নামের আগে ‘ডা:’ লেখা নিয়ে বিতর্ক বাধে। তখন কুনার নিজেই জানান, তিনি পিএইচডি নন। এরপরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির আরও একটি দেওয়াল লিখনের ছবি ভাইরাল হয়। সেখানে কুনারের নামের আগে লেখা ছিল ‘কম:’ (কমরেড) শব্দ। সাধারণত বাম প্রার্থীদের নামের আগেই এই শব্দ লেখা হয়। এরপরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপি-সিপিএম আঁতাতের অভিযোগ করা হয়। বিজেপি-র পাল্টা দাবি করেছিল, পরিকল্পিতভাবে তাদের প্রার্থীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়েই তাঁর নামের আগে ‘কমরেড’ লেখা হয়েছিল।’’

সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কে বলেন, ‘‘তৃণমূল ও বিজেপি সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার রাজনীতি করছে। তবে মানুষ এখন অনেক সচেতন।’’ ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেসের সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এসব মিথ্যাচারের সস্তা চমক দিয়ে কখনও মানুষের মন পাওয়া যায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement