ধসে গিয়েছে বাঁধের রাস্তা। শনিবার কোলঘাটে। নিজস্ব চিত্র
এক রাতের মুষলধারে বৃষ্টি। তাতেই ধস নামল রূপনারায়ণের বাঁধে। আরও বৃষ্টি হলে ওই বাঁধ ভেঙে কোলাঘাটের দেনান এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়েরা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার এলাকায় যান কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডল এবং কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রাজকুমার কুণ্ডু। তবে বিডিও’র এলাকায় ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে কোলাঘাট এলাকায়। বৃষ্টিতে রূপনারায়ণ নদের জল ফুলে ফেঁপে ওঠে। তাতেই তাতে আমলহণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দেনান গ্রামে রূপনারায়ণের বাঁধে ১৫০ মিটার অংশে ধসে যায়। ধস নামার ফলে রাস্তার ওপর দিয়ে যান চলাচলে ব্যহত হয়। এর পরেই এ দিন বাঁধ পরিদর্শনে যান বিডিও মদন মণ্ডল। তাঁর ছিলেন কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রাজকুমার কুণ্ডু। দু’জনেক পেয়ে গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, বাঁধের রাস্তাটি খুব অল্প সময় অন্তর বেহাল হয়ে যায়। প্রত্যেকবার বাঁধ মেরামতির সময় শুধু বালি ফেলে তার ওপর পিচ ঢেলে চলে যান ঠিকাদার। শাসকদলের নেতাদের কাটমানি দেওয়ার ফলেই তাঁরা এরকম কাজে সাহস পান বলে অভিযোগ।
বিক্ষোভের জেরে দেনান সিনেমা মোড় এলাকায় বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বেশ কিছুক্ষণ গাড়ির মধ্যেই আটকে যান। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, বাঁধের ধস মেরামতির কাজ শেষ হলে তবেই ছাড়া হবে গাড়ি। পরে বিডিও দ্রুত বাঁধ মেরামতির আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা গাড়ি ছেড়ে দেন।
দেনান গ্রামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ওঁরা এসি ঘরে থাকেন। আমাদের সমস্যা কী করে বুঝবেন? সব কাজেই নেতাদের কাটমানি দিতে হয়। তাই ঘন ঘন খারাপ হচ্ছে রাস্তা ও বাঁধ। বাঁধের এই ধস দ্রুত মেরামত না করা হলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।’’
উল্লেখ্য, মাসখানেক আগেই রাজকুমার কুণ্ডুর বিরুদ্ধে কাটমানি-ফ্লেক্স পড়েছিল। আর এ দিন তাঁকে সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়েরা। যদিও রাজকুমারের দাবি, ‘‘কোন বিক্ষোভ হয়নি। ওই জায়গায় রূপনারায়ণের বাঁধে ধস নেমেছে। আমি বিডিওর সঙ্গে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। স্থানীয় মানুষ সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন, এই যা।’’
কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা ধসে যাওয়া অংশ মেরামতির কাজ আজ থেকেই শুরু করে দিয়েছি। আপতকালীন পরিস্থিতিতে বাঁধ রক্ষা করতে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার, তা আমরা নিয়েছি। পুরো বাঁধ নতুন করে মেরামতির জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র ডাকা হয়ে গিয়েছে। পুজোর পর কাজ শুরু করা হবে।’’