Unauthorized Bridge Construction

তৃণমূল নেতার নির্দেশে সরকারি জায়গায় সেতু! বাড়ছে ক্ষোভ

অবিলম্বে সেতুর কাজ বন্ধের দাবিতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের একাধিক দফতরের পাশাপাশি নবান্নে চিঠি দিয়েছেন বৈষ্ণবচক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রুকসাহানা পারভিন বেগম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:১৭
Share:

চলছে সেতু তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র

কচুরিপানার চাপে গত বছর অক্টোবরে ভেঙে যায় দুই মেদিনীপুরের সংযোগ রক্ষাকারী কালাচাঁদ সেতু। সেই জায়গায় নতুন সেতু তৈরির কাজ শুরু করছেন এক যুবক। নতুন সেতু দিয়ে পারাপার করলে দিতে হবে টাকা। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের ঘাটাল জেলা সভাপতি আশিস হুদাইত পছন্দের ব্যক্তিকে দিয়ে সেতু তৈরি করিয়ে বেআইনি ভাবে আয়ের পথ তৈরি করছেন। সরকারি জায়গায় কী ভাবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে সেতু? উঠছে প্রশ্ন।

Advertisement

কোলাঘাট এবং দাসপুর-২ ব্লকের মধ্য দিয়ে বয়েছে গিয়েছে দূর্বাচাটি নদী। পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের বৈষ্ণবচক এলাকার কলাগাছিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-২ ব্লকের জ্যোৎঘনশ্যাম গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শ্যামগঞ্জের সংযোগ রক্ষাকারী ছিল কালাচাঁদ সেতু। ওই সেতু দিয়ে প্রতিদিন দুই জেলার কয়েক হাজার বাসিন্দা পারাপার হতেন। গত অক্টোবরে কচুরিপানার চাপে সেতুটি ভেঙে যায়। সম্প্রতি ওই জায়গায় নতুন স্টিলের সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, দাসপুরের এক যুবক ব্যক্তিগত উদ্যোগে সেতুটি তৈরি করছেন। সেতু চালু হয়ে গেলে টাকা দিয়ে পারাপার হতে হবে।

অবিলম্বে সেতুর কাজ বন্ধের দাবিতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের একাধিক দফতরের পাশাপাশি নবান্নে চিঠি দিয়েছেন বৈষ্ণবচক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রুকসাহানা পারভিন বেগম। যদিও সেতু তৈরির কাজ থেমে নেই। বৈষ্ণবচক গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শিবনাথ সামন্ত বলেন, "সরকারি অনুমতি ছাড়াই সেতু তৈরি হচ্ছে। আমরা সেতু তৈরির কারিগরদের ডেকে পাঠাই। তাঁরা বলেন, তৃণমূলের ঘাটাল জেলার সভাপতি আশিস হুদাইতের নির্দেশে সেতু তৈরি হচ্ছে। সরকারি জায়গায় কোনও টেন্ডার ছাড়া এ ভাবে সেতু তৈরি করা যায় না। তা ছাড়া সেতু পারাপারের জন্য মানুষজনকে টাকা দিতে হবে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। প্রয়োজনে আমরা আইনের দ্বারস্থ হব।" কোলাঘাটের বিডিও অর্ঘ্য ঘোষও বলেন, ‘‘সেতু তৈরির জন্য তাঁদের থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি।"

Advertisement

তৃণমূলের ঘাটাল জেলা সভাপতি তথা দাসপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সেচ ও কৃষি কর্মাধ্যক্ষ আশিস হুদাইত বলেন, "সেচ দফতর এবং দাসপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির অনুমতিক্রমে এক যুবক সেতু তৈরি করছেন। পঞ্চায়েত সমিতিতে তিনি রাজস্ব জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন।" আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তৃণমূল নেতা বেআইনি ভাবে টাকা আয়ের জন্য প্রভাব খাটিয়ে সরকারি জায়গায় সেতু তৈরি করাচ্ছেন, বলে সরব বিজেপি। বিজেপির আরও অভিযোগ, পুরনো কালাচাঁদ সেতু দিয়ে পারাপারের জন্য টাকা দিতে হত। সেই টাকা কোনও সরকারি কোষাগারে জমা পড়ত না।

বিজেপির কোলাঘাট মণ্ডল ৫-এর সভাপতি বিশ্বনাথ রাম বলেন, "সরকারি জায়গায় সেতু তৈরি করতে গেলে প্রশাসনের অনুমোদন দরকার হয়। সেতু তৈরির জন্য টেন্ডার ডাকতে হয়। এসব কিছুর তোয়াক্কা না করে তৃণমূল নেতা আশিস হুদাইত প্রভাব খাটিয়ে তাঁর পছন্দের লোককে দিয়ে নদীর উপর সেতু তৈরি করছেন। আমরা এর বিরুদ্ধে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব। আমরা চাই সরকারি উদ্যোগে ওখানে সেতু তৈরি হোক। যাতে সাধারণ মানুষকে টাকা দিয়ে পারাপার না হতে হয়।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement