ডাইন অপবাদ দিয়ে এক আদিবাসী দম্পতির উপর অত্যাচার চালিয়ে তাঁদের ঘরছাড়া করা হয়েছিল। রবিবার পুলিশ-প্রশাসনের উদ্যোগে ওই দম্পতিকে ঘরে ফেরানো হয়েছে। মেদিনীপুর সদর ব্লকের গুড়গুড়িপালের শিরিষডাঙ্গার ঘটনা।
এই ঘটনায় শনিবারই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন গুরুদাস মান্ডি। তাঁর অভিযোগ ছিল, দিন কয়েক ধরেই তাঁর এবং তাঁর স্ত্রী বুধন মান্ডির উপরে ডাইন অপবাদ দিয়ে অত্যাচার চালাচ্ছে তাঁরই ভাই রঘুনাথ মান্ডি-সহ কয়েকজন। তাঁদেরকে ঘরছাড়াও করা হয়। গুরুদাসের দাবি ছিল, দিন কয়েক আগে তাঁর ভাই তাঁদেরকে কেশিয়াড়ির খড়িকার কাছে এক গুণিনের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। ওই গুণিন তাঁদের ডাইন অপবাদ দেয়। এরপরই ঘরে ফেরার পর তাঁর ভাইয়ের অত্যাচার শুরু হয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ঘটনার পিছনে সম্পত্তিগত বিবাদথাকতে পারে। স্থানীয় সূত্রে খবর, রঘুনাথের ছেলে কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছে। ডাক্তার দেখিয়েও জ্বর না কি সারছে না। এরপরই গুরুদাস এবং বুধনকে ডাইন সন্দেহ করে রঘুনাথ। জোর করেই দাদা-বৌদিকে কেশিয়াড়ির ওই গুণিনের কাছে নিয়ে যায় সে। রবিবার পুলিশ- প্রশাসনের একটি দল গুরুদাসের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকে ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থাও করে।
ডাইন সন্দেহে নির্যাতন নতুন নয়। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরে একাধিকবার ডাইন অপবাদ দিয়ে অত্যাচারের ঘটনা সামনে এসেছে। এমন ঘটনা এড়াতে সরকারি উদ্যোগে প্রচার হয়। তারপরেও যে কুসংস্কার যে দূর করা যাচ্ছে না, মেদিনীপুর সদর ব্লকের এই ঘটনা তারই প্রমাণ। স্থানীয় মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অঞ্জন বেরা বলেন, ‘‘পুলিশ- প্রশাসনের দল এলাকায় এসেছিল। ওই দম্পতিকে ঘরে ফেরানো হয়েছে।’’ তিনি জানান, এই এলাকায় একটি স্বাস্থ্য শিবির করার উদ্যোগ নিচ্ছি। সচেতনতামূলক প্রচার করারও উদ্যোগ নেব।