লাইসেন্সে বিড়ম্বনা!
দিন কয়েক আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছেন কেশিয়াড়ির বাসিন্দা মিহির মহাপাত্র। লাল রঙের বাঁধানো বই বা স্মার্ট কার্ড নয়, একটি পাতলা কাগজের প্রিন্ট আউটই (ইউজার্স কপি) লাইসেন্স হিসেবে দেওয়া হয়েছে মিহিরবাবুকে। নতুন লাইসেন্স পেয়ে গাড়ি নিয়ে দিঘায় গিয়েছিলেন তিনি। দিঘা থানার এক সাব-ইন্সপেক্টর গাড়ি আটকে লাইসেন্স দেখতে চাইলে মিহিরবাবু ওই কাগজের চিরকুট বের করে দেখান। অভিযোগ, এই চিরকুট দেখে বেজায় চটে যান ওই সাব ইন্সপেক্টর। সঙ্গে সঙ্গে মিহিরবাবুকে মামলার কাগজ ধরিয়ে দেন তিনি।
শুধু মিহিরবাবু নন, কাগজের চিরকুটের লাইসেন্স নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে সমস্যায় পড়ছেন আরও অনেকেই। লাইসেন্সের ইউজার্স কপি নিয়ে বিভ্রান্ত পুলিশও। মিহিরবাবুর অভিযোগ, “দিন কয়েক আগে খড়্গপুরের পরিবহণ দফতর থেকে লাইসেন্স পেয়েছি। এই কথাটা দিঘায় গিয়ে পুলিশকে কোনওভাবেই বোঝাতে পারলাম না। উল্টে ধমক খেয়ে মামলার মুখে পড়তে হল।’’
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৪ নভেম্বর মেদিনীপুর ও খড়্গপুরে লাইসেন্স হিসেবে দ্রুত স্মার্ট কার্ড চালুর নির্দেশ আসে। সেই মতো খড়্গপুরের আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিকের দফতরে পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হয়। পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে মেদিনীপুরেও। যদিও স্মার্ট কার্ড দেওয়া শুরু হয়নি এখনও। আগে লাল রঙের একটি ছোট বইয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হত। স্মার্ট কার্ড চালুর নির্দেশ আসার পর লাল কভারের বইও দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তারপর থেকে একটি কাগজের প্রিন্ট আউটই ড্রাইভিং লাইসেন্স হিসেবে দেওয়া হচ্ছে।
পরিবহণ দফতরের খড়্গপুর আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে সম্প্রতি লাইসেন্স পেয়েছেন সিঞ্চন পাল। তিনি বলছেন, “এ রকম পাতলা কাগজে লাইসেন্স দেওয়া হয় জানা ছিল না। এই কাগজ রাখাও মুশকিল। যে কোনও সময়ে জলে-ঘামে ভিজে যেতে পারে। কলকাতায় কত আগে স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে লাইসেন্স দেওয়া চালু হয়েছে। এখানেও অবিলম্বে স্মার্ট কার্ড চালু হওয়া উচিত।”
খড়্গপুরের আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সৌরেন দাস বলছেন, “রাজ্য থেকে নির্দেশ পাওয়ার পরেই স্মার্ট কার্ডের পরিকাঠামো তৈরির জন্য অফিসের একটি ঘর ছেড়ে দেওয়া হয়। তারপরেও স্মার্ট কার্ড দেওয়া কেন চালু হচ্ছে না বুঝতে পারছি না।” একইভাবে, জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক বিশ্বজিৎ মজুমদারের বক্তব্য, “রাজ্যের যে সংস্থা এই স্মার্ট কার্ডের পরিকাঠামো গড়েছে তারা কোনও সমস্যায় রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তাই এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে না। আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।” স্মার্ট কার্ডের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভেন্ডর সংস্থার আধিকারিক শুভেন্দু শীল বলেন, “পরিকাঠামো তৈরি হলেও এখনও পরিবহণ মন্ত্রক স্মার্ট কার্ড চালুর নির্দেশিকা দেয়নি। সবুজ সঙ্কেত পেলেই কাজ চালু হবে।”